কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে ব্যাপক সহিংসতা ও নাশকতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার নেপথ্যে উগ্রপন্থী বা জঙ্গি সংগঠনের কারো যোগসাজশ থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট প্রধান মো. আসাদুজ্জামান। গতকাল বুধবার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যেহেতু নরসিংদী কারাগারে হামলার ঘটনা ও জঙ্গি ছিনতাই হয়েছে বা ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে; আর এ আন্দোলনে যারা নাশকতা চালিয়েছে ও উসকানি দিয়েছে আমরা এ রকম দু-একটি গ্রুপকে শনাক্ত করেছি। একজনকে মঙ্গলবার শনাক্ত করেছি, যাঁকে এর আগে জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
এই আন্দোলনে তিনি ব্যাপক সহিংস কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন। আমরা তাঁর নাম-নম্বর শনাক্ত করেছি। অচিরেই তাঁকে আমরা গ্রেপ্তার করতে পারব। তাই আমাদের ধারণা, এ কোটা সংস্কার আন্দোলনে উগ্রপন্থী বা জঙ্গিদের যোগসাজশ বা অংশগ্রহণ থাকতে পারে।আসাদুজ্জামান বলেন, আন্দোলনের মধ্যে গত শুক্রবার বিকেলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসংলগ্ন নরসিংদীর জেলা কারাগারে নজিরবিহীন হামলার সময় অস্ত্রাগার ভেঙে অস্ত্র ও গুলি লুট করা হয়। জেল সুপার, জেলারসহ ঊর্ধ্বতন কারা সদস্যদের জিম্মি করে মারধর করা হয়। তাঁদের পরিবারের নারী ও শিশুদের কারা মসজিদে নিয়ে দীর্ঘ সময় আটকে রাখে শত শত লোক। তাদের অনেকের হাতে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র ছিল।
পরে কারা কর্মকর্তাদের বাসাসহ বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। আন্দোলনের নামে কয়েক শ সশস্ত্র জনতা কারাভ্যন্তরে ঢুকে বন্দিদের মুক্ত করে দ্রুত বের হওয়ার নির্দেশ দিলে ৮২৬ বন্দির সবাই পালিয়ে যান। এর মধ্যে ৯ জন জঙ্গিও আছেন। তাঁদের মধ্যে শীর্ষ দুই নারী জঙ্গিকে গতকাল ঢাকার মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিটিটিসি। তাঁরা হলেন ইশরাত জাহান মৌসুমি মৌ (৩০) ও খাদিজা পারভীন মেঘলা ওরফে মেঘনা (৩০)।
তিনি বলেন, নরসিংদী কারাগারে হামলায় সরাসরি জড়িত সবাইকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হবে।