ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমস্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। একটি চক্র দেশ-বিদেশে অবস্থান করে এই ব্যবসা পরিচালনা করছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তৃণমূল থেকে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের কেউ জড়িত থাকলেও তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।
আজ রবিবার (২৪ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় টঙ্গীর মধুমিতা রোডের অগ্রণী টাওয়ারে র্যাবের ভিওআইপি বিরোধী চলমান অভিযান পরিদর্শন শেষে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। দুই দিনব্যাপী অব্যাহত অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামসহ মূলহোতা ও তার সহযোগীকে আটক করেছে র্যাব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা বন্ধ করার অভিযানে কারো কোনো অবহেলা থাকলে কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই ব্যবসা সরকারের রাজস্ব আহরণে বাধার সৃষ্টি করছে।
যেকোনো মূল্যে এই অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে ভিশন ২০৪১-এ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সবাইকে কাজ করতে হবে।
এ সময় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেল (এনটিএমসি)-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ, র্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন, র্যাব-১-এর সিইও লে. কর্নেল মোসতাক আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা।
প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের পর র্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন চলমান অভিযানের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার থেকে টঙ্গীর মধুমিতা রোডের অগ্রণী টাওয়ারের ১২ তলায় অভিযান চলছে। এই পর্যন্ত অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামের সঙ্গে ৩২টি সিম ব্লক ও সাড়ে ১১ হাজারের অধিক বিভিন্ন কম্পানির সিম পাওয়া যায়। এ সময় মূলহোতা তাজুল ইসলাম ও সিম সরবরাহকারী হারুন অর রশীদকে আটক করা হয়েছে। অগ্রণী টাওয়ারের আশপাশে একাধিক ভবনে এ ধরনের অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সন্ধান পাওয়া গেছে।
তিনি আরো বলেন, অগ্রণী টাওয়ারে প্রতিদিন লক্ষাধিক ফোন কল আসত।
এতে প্রতিদিন তাদের আয় হতো লক্ষাধিক টাকা। গতকাল বন্ধ থাকার পরও ৭০ হাজার ফোন কল এসেছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, এই ভবনের আশপাশে আরো ভিওআইপি সেটআপ থাকতে পারে। তাই অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
টঙ্গীর অগ্রণী টাওয়ারে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা শুরুর বিষয়ে র্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, তাজুল ইসলামের বাড়ি কুমিল্লা। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি অতিক্রম করতে পারেননি। ২০০৭ সালে তিনি ডেফোডিল কম্পানিতে লাইনম্যানের চাকরিতে যোগ দেন। ২০১৪ সালে এই কম্পানি বন্ধ হওয়ার পর তার সংরক্ষণে থাকা যন্ত্রপাতি দিয়ে প্রথমে ঢাকার শুক্রাবাদে ছোট আকারে ব্যবসা শুরু করেন।
২০১৮ সালে টঙ্গী এলাকার জনৈক এক প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে সখ্যের মাধ্যমে মধুমিতা অগ্রণী টাওয়ারের ১২তলায় তিনটি ফ্ল্যাট ক্রয় করে এই ব্যবসা শুরু করেন তাজুল ইসলাম। আটক হারুন অর রশীদ ৬৫ টাকা করে বিভিন্ন কম্পানির সিম ক্রয় করে তাজুল ইসলামকে ৭২ থেকে ৭৫ টাকায় সরবরাহ করত। তবে হারুন অর রশীদ ৭ থেকে ১০ টাকার মধ্যেও সিম ক্রয় করতে পারত বলেও জানান তিনি।