জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ধর্ম যার যার বাংলাদেশটা হোক সবার। এ দেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সব ধর্মের বসবাস নিশ্চিত করতে চাই। দেশ আমাদের সবার, সুতরাং এই দেশে আমরা সব ধর্মের মানুষ তাদের নিজস্ব আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চাই। এখানে সংখ্যালঘু বলে কোন জিনিস নেই।
শফিকুর রহমান আরও বলেন, আমরা প্রতিহিংসার কিংবা প্রতিশোধের রাজনীতি করি না। কারণ প্রতিহিংসার কিংবা প্রতিশোধ কখনও শান্তি বয়ে আনতে পারে না। কোন মানুষ যদি সহিংসতার শিকার হন, তাহলে প্রচলিত আইনের দ্বারস্থ হবেন। ফ্যাসিবাদী আমলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের শাসনের যেদিন অবসান ঘটবে তার দুইদিনের মধ্যে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কমপক্ষে ৫ লাখ লোককে হত্যা করা হবে। কিন্তু কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া জেলা-উপজেলায় কেউ তো মারা গেলো না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী এদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ করবে শিক্ষাখাতে। প্রত্যেক সন্তানকে নিজের সন্তানের মতো দেখবো। একজন শিক্ষার্থীকে তার মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি তাকে কর্মউপযোগি করে গড়ে তোলা হবে। সার্টিফিকেট হাতে আসার আগে তার কাজ যেন চলে আসে। এসএসসি, এইচএসসি, মাষ্টার্স এত পরীক্ষার পর আবার চাকরির জন্য পরীক্ষা দিতে হবে কেন? পরীক্ষা দেয়া মানে শিক্ষার উপর কোন আস্থা নাই। প্রতিভা বিকাশে কোন পৃষ্টপোষকতার অভাবে আমাদের প্রতিভাগুলো বিকশিত হয় না। সমাজের সর্বত্র যে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে তা বন্ধ করবে। চুরি দুর্নীতি বন্ধ করবে।
মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ডিসেম্বরে বা আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন দিবেন। আমরা দেখতে চাই যে তিনি তার কথার উপর ঠিক থাকবেন। আমরা দেখতে চাই না যে তিনি তার কথা বদলাবেন। যেহেতু কিছু সংস্কারের প্রশ্ন জড়িত রয়েছে এজন্য ডিসেম্বরে হতে পারে আবার নাও হতে পারে। আগামী বছরের মার্চে রোজার মাস, আমরা বলেছি ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি হলে ভালো।
উপজেলা জামায়াতের আমির সহকারী অধ্যাপক মো. আব্দুল মুন্তাজিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন কুলাউড়া সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সৌম্য প্রদীপ ভট্টাচার্য্য সজল, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. অরুনাভ দে, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের আহবায়ক ড. রজত কান্তি ভট্টাচার্য্য, পূজা উদযাপন কমিটির সেক্রেটারি অজয় দাস, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইয়ামির আলী, বিচিত্র দে, মেম্বার সত্য নারায়ন নাইডু, অশোক ধর, মৌলভীবাজার পৌর জাময়াতের সেক্রেটারি তাজুল ইসলাম ও রাজানুর রহিম ইফতেখার প্রমুখ।
এর আগে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান মঙ্গলবার সকাল ১০টায় উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের নবাবগঞ্জ বাজারে দাওয়াতি সভা, বেলা দেড়টায় জুড়ি নাইট চৌমুহনীতে পৃথক দাওয়াতি সভা, বেলা সাড়ে তিনটায় জেলা ছাত্র শিবিরের সদস্যদের সাথে শিক্ষা বৈঠকে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন। বিকেল ৫টায় রবিরবাজার মসজিদে আছরের নামাজ আদায় করে মুসল্লীদের উদ্দেশ্য ও সাড়ে পৃথিমপাশা ইউনিয়নে দাওয়াতি সভায় যোগ দেন। সন্ধ্যা সাতটায় ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নে ও রাত সাড়ে আটটায় ভাটেরা ইউনিয়নে জনসংযোগ ও দাওয়াতি সভায় অংশ নিবেন।