খাদ্যের মানের এমন পরিস্থিতিতে আজ সারা দেশে পালিত হচ্ছে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২৫। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘খাদ্য হোক নিরাপদ সুস্থ থাকুক জনগণ’।
২০১৮ সালে দেশে প্রথমবারের মতো পালিত হয় নিরাপদ খাদ্য দিবস। ওই বছর সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে সচেতন করে তোলার অংশ হিসেবে ২ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) দেশের বিভিন্ন পরীক্ষাগারে নিয়মিতভাবে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের মান পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। গত নভেম্বরে ৩০টি খাদ্যপণ্যের ১৫২টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ২৯টি ছিল প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য।
জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস পালনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সর্বসাধারণকে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ, সরবরাহ, বিপণন ও বিক্রয় সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বিষয়ে সর্বস্তরে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে এই দিবস পালন করে থাকে।
বিএফএসএর ল্যাবরেটরির গবেষণায় খাদ্য নমুনার পরীক্ষা কার্যক্রমে দেখা গেছে, গত বছরের জুলাই থেকে গত নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের ৪৫০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬০টি নমুনায় সঠিক মান পাওয়া গেছে। বাকি ৯০টি নমুনায় সঠিক মান পাওয়া যায়নি।
অনিরাপদ খাবার গ্রহণের কারণে দেহে ক্যান্সার, কিডনি রোগ ও বিকলাঙ্গতাসহ দুই শতাধিক রোগের সৃষ্টি হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, প্রতি ১০ জনে একজন অনিরাপদ খাবার খেয়ে অসুস্থ হচ্ছে।
বছরে প্রায় চার লাখ ২০ হাজার মানুষ অনিরাপদ খাদ্য খেয়ে মারা যাচ্ছে। এমন বাস্তবতায় দেশের খাদ্য নিরাপদ করতে প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানসহ খাদ্য উৎপাদনের সব পর্যায়ে তদারকি বাড়ানো এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
বিএফএসএর চেয়ারম্যান জাকারিয়া বলেন, ‘দেশের মানুষের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে আমরা দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করছি। প্রতিটি জেলা থেকে খাদ্য মান পরীক্ষা ও ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। মানহীন পণ্যের ক্ষেত্রে আমরা প্রথমে মান উন্নয়নের কিছুটা সময় দিয়ে থাকি। কিন্তু ভেজাল পণ্য পেলে আইন অনুসারে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।’