ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাতটি কলেজের অধিভুক্তি আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০২৪-২৫) সেশন থেকে বাতিলের দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাবির একদল শিক্ষার্থী। আজ সোমবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এই বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশ প্রদক্ষিণ করে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে সমাবেশ করে।
সমাবেশে তারা সাত কলেজকে ঢাবির জন্য এক বিষফোঁড়া উল্লেখ করে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এর অধিভুক্ত বাতিল চান।
এ সময় তারা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুস্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত না নিলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করার হুশিয়ারি দেন।খায়রুল আহসান মারজান বলেন, আমরা এখানে বিক্ষুব্ধ মন নিয়ে হাজির হয়েছি। এই অধিভুক্তির শুরু থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এর বিরোধিতা করে আসছে। তৎকালীন সময়ে একটি শান্তিপূর্ণ সমঝোতার কথা বলা হলেও গত ছয় বছরে কোনো সমাধান দিতে পারেনি।
এই নতুন বাংলাদেশ উপদেষ্টা পরিষদে যারা আছেন তারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ঠিক রাখতে এটি বাতিলের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মইদুল ইসলাম বলেন, র্যাংকিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিন দিন অবনতির কারণ এই সাত কলেজ।
আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে এই কলেজগুলোকে বিবেচনায় নেওয়া হয়। তাদের অধিভুক্তি বাতিল করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আরো অনেক আগাবে র্যাংকিংয়ে। তাদের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিম্নগামী হচ্ছে। আমরা অতিশীঘ্রই এই অধিভুক্তি বাতিল চাই। অন্যথায় আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হব।
সমাবেশে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল চাওয়ার ছয়টি কারণ উল্লেখ করে। সেগুলো হলো-
১। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিক কার্যক্রমে (রেজিস্ট্রার বিল্ডিং) বিড়ম্বনা।
২। আমাদের শিক্ষকদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি অবহেলা।
৩। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত ও ফলাফল (সাত কলেজের খাতা মূল্যায়ন, কারিকুলাম ও প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, প্রাক্টিক্যাল পরীক্ষা ও ভাইভা নেওয়া ইত্যাদি) প্রকাশে বিলম্ব এবং সেশনজট সমস্যা।
৪। তীব্র আবাসন সংকট ও গবেষণায় ফান্ডের অভাব থাকা সত্ত্বেও সাত কলেজের জন্য প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের আশ্বাস প্রদান।
৫। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অস্তিত্ব সংকট / পরিচয় বিড়ম্বনা।
৬। আন্তর্জাতিক র্যাংকিং গণনা করার ক্ষেত্রে অধিভুক্ত কলেজগুলোকেও বিবেচনা করা হয় বিধায় ঢাবির অবস্থান নিম্নগামী হচ্ছে।