Friday , 18 October 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
গণমাধ্যমকে কেন রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়?

গণমাধ্যমকে কেন রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়?

Online Desk:

গণমাধ্যমকে প্রায়শই রাষ্ট্রের “চতুর্থ স্তম্ভ” হিসেবে অভিহিত করা হয়। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধারণা, যার মাধ্যমে বোঝানো হয় যে গণমাধ্যম কোনো রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামোর এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ এবং আইনসভা—এই তিনটি স্তম্ভের পাশাপাশি গণমাধ্যম সমাজে জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গণমাধ্যমের এই বিশেষ অবস্থানটি কেন এবং কীভাবে তৈরি হয়েছে, তা বোঝার জন্য বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করা জরুরি।

গণমাধ্যমের প্রধান কাজ হলো সংবাদ সরবরাহ করা এবং জনগণকে সচেতন করা। এটি শুধুমাত্র খবর প্রচার করার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং সমালোচনা বিশ্লেষণ উপস্থাপন করার মাধ্যমে জনগণের মতামত গঠনে ভূমিকা পালন করে। গণমাধ্যমের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ রাষ্ট্রের কার্যক্রম এবং নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পারে। একটি স্বাধীন গণমাধ্যম জনগণের চোখ ও কান হিসেবে কাজ করে এবং সরকারের কার্যক্রমের প্রতি নজর রাখে।

গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয় মূলত তার গণতান্ত্রিক দায়িত্বের কারণে। গণতন্ত্রের মূল শক্তি হলো জনমত এবং এই জনমত গঠন করার প্রক্রিয়ায় গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শুধু সংবাদ প্রচার করে না, বরং সরকারের কার্যক্রমের সমালোচনা এবং বিশ্লেষণ করে। যখন গণমাধ্যম সঠিকভাবে কাজ করে, তখন এটি দুর্নীতি এবং অবিচারের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান নিতে পারে।

গণমাধ্যমের একটি মূল দায়িত্ব হলো শাসকগোষ্ঠী এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রমের ওপর জনসাধারণের নজরদারি বজায় রাখা। সাংবাদিকতার মাধ্যমে দুর্নীতি, অসততা এবং অনৈতিক কার্যকলাপের প্রকাশ ঘটানো হয়। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং শক্তিশালী অবস্থান থাকলে সরকারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা সহজ হয়, যা সমাজে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে। এ কারণেই গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণ্য করা হয়, কারণ এটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় জনগণের অধিকার রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

সমাজে প্রভাব

গণমাধ্যমের প্রভাবশালী অবস্থান কেবল রাষ্ট্রের জবাবদিহিতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।

স্বাধীন গণমাধ্যমের প্রয়োজনীয়তা

গণমাধ্যমের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে কাজ করার জন্য এর স্বাধীনতা অত্যন্ত জরুরি। একটি স্বাধীন গণমাধ্যম সরকার বা কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করতে পারে। গণমাধ্যম যখন স্বাধীন হয়, তখনই তা প্রকৃতপক্ষে জনগণের পক্ষে কথা বলতে সক্ষম হয় এবং সত্য প্রকাশের মাধ্যমে রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভের ওপর নজরদারি রাখতে পারে। গণমাধ্যমকে যখন কোনোভাবে দমন করা হয়, তখন সমাজে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা হ্রাস পায়, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য ক্ষতিকর।

শেষ কথা

গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী এবং টেকসই রাখতে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। এটি জনগণের পক্ষ থেকে সরকার এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য কাজ করে, সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনতে সহায়ক হয়। তাই, একটি স্বাধীন এবং শক্তিশালী গণমাধ্যম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং তার সঠিক পরিচালনার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

হায়দার আলী

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply