চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতিতে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় চার শতাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ এবং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতারা জানিয়েছেন।
এদিকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে সীমান্তে দালাল, প্রতারক, ছিনতাইকারী ও মানব পাচারকারী সিন্ডিকেটের রমরমা বাণিজ্য চলছে বলে জানা গেছে। রোহিঙ্গারা বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দালালদের শরণাপন্ন হচ্ছে।
দালালচক্র টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছে।
মায়ানমার থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, মংডু টাউনশিপ দখল নিয়ে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে বড় ধরনের সংঘাতে জড়িয়েছে জান্তা সরকারের বাহিনী। সপ্তাহখানেক ধরে দুই পক্ষের মধ্যে চলছে তুমুল যুদ্ধ। এমন পরিস্থিতিতে মংডু টাউনশিপের হাজার হাজার রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে ছুটছে নাফ নদের তীরে।
অন্তত ৪০ হাজার রোহিঙ্গা নাফ নদের তীরে এসে জড়ো হয়েছে। তারা সুযোগ খুঁজছে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের।
নাফ নদ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, ২০১৭ সালে বা এর পরবর্তী সময়ে রোহিঙ্গারা খুব সহজে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পেরেছিল। কিন্তু এখন সেই পরিস্থিতি নেই।
এখন সীমান্ত পাড়ি দিতে নাফ নদে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। তাই বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে রোহিঙ্গারা দালালদের সঙ্গে চুক্তি করছে।
আরাকান (রাখাইন) রাজ্যের মংডু কাদিরবিলের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওসমান কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং ৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন গত রবিবার। তিনি পরিবারের সাত সদস্য নিয়ে টানা তিন দিন লুকোচুরি খেলার পর বাংলাদেশে আসতে সমর্থ হয়েছেন।
তিনি জানান, বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা চুক্তি করেন দালালের সঙ্গে।
তবে বাংলাদেশে নিরাপদে প্রবেশ করার পর পড়েন প্রতারক সিন্ডিকেটের কবলে।
তিনি জানান, টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া জাদিমুরা এলাকার প্রতারক সিন্ডিকেটের সদস্যরা ওসমান পরিবারকে আটকিয়ে পুশব্যাক করার জন্য বিজিবির হাতে তুলে দিতে চায়। শেষ পর্যন্ত প্রতারকরা তাদের চারজনকে আটকিয়ে তিনজনকে ছেড়ে দেয়। পরে সেই চারজনের কাছ থেকে জনপ্রতি ২৫ হাজার টাকা করে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।