ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে অবস্থান নিয়েছেন শেখ হাসিনা। শুরুতেই ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তিনি (শেখ হাসিনা) তার গন্তব্য নির্ধারণ করবেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সহযোগী সংস্থা নিউজ-১৮ আজ শুক্রবার (৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারতেই থাকছেন শেখ হাসিনা। তবে দেশটিতে শরণার্থী বা সাহায্যপ্রার্থীর আইন না থাকায় তিনি ভারতের ভিসা ব্যবহার করে ভারতে অবস্থান করবেন।
নিউজ-১৮ জানিয়েছে—বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে দীর্ঘ সময়ের জন্য অবস্থান করতে যাচ্ছেন। এর আগে জানানো হয়েছিল শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, “বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপদে কোনো দেশে চলে যাওয়ার বিষয়টি এখনই কার্যকর হচ্ছে না। আমাদের আশ্রয় বা শরণার্থী আইন নেই এবং আমরা কেস-টু-কেস ভিত্তিতে থাকার অনুমতি দিই…তার থাকার ভিসা হবে।
শেখ হাসিনা সোমবার ভারতে অবতরণের পর থেকেই সেখানে রয়েছেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে ভাষণ দিতে গিয়ে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, শেখ হাসিনা খুব সংক্ষিপ্ত নোটিশে ভারতে আসার অনুমোদন চেয়েছিলেন।
ভারত সরকার সর্বদলীয় বৈঠকে বলেছে, তারা এই প্রবীণ রাজনীতিবিদকে তার পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সময় দিয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, শেখ হাসিনা শোকাচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছেন এবং সরকার এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার আগে তাকে সুস্থ হওয়ার জন্য সময় দিচ্ছে।
নয়াদিল্লিও এখানে একটি কূটনৈতিক দ্বিধার সম্মুখীন হচ্ছে। তারা ক্ষমতাচ্যুত নেত্রীকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিতে চায় না। কারণ এতে বাংলাদেশের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক জটিল করতে পারে। বাংলাদেশ ভূ-রাজনৈতিকভাবে ভারতের কৌশলগত অংশীদার। একই সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ইতিহাসও মাথায় রাখতে হবে।
তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অনেক আগেই ইন্দিরা গান্ধীর সরকার তাকে আশ্রয় দিয়েছিল। কারণ বাবা শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পুরো পরিবার ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশে অস্থিরতার সময় নিহত হন। সুতরাং এই মুহূর্তে তাকে পরিত্যাগ করা সহজ সিদ্ধান্ত হবে না, বিশেষ করে দিল্লির সঙ্গে তার সম্পর্ক বিবেচনা করলে।