সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের বহু নেতাকর্মী। তাঁদের যুক্তি, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিদের জন্য কোটা রাখার যৌক্তিকতা নেই। দলের একটি অংশ এমন অবস্থান নেওয়ায় হতাশ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সহানুভূতিশীল নেতাকর্মীরা। ।
আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর একাধিক সূত্র জানায়, দলের অভ্যন্তরে কোটা রাখার পক্ষে এবং বিপক্ষে উভয় মতই রয়েছে।
কেউ মনে করেন, ১৯৭৫ সালের পর থেকে ১৯৯৬ এবং ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার বাস্তবায়ন ঘটেনি। বরং মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার কারণে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের চাকরি বঞ্চিত করা হয়েছে। ফলে এখন সেই পরিবারগুলোর সদস্যদের কিছুটা বাড়তি সুযোগ দেওয়া উচিত। তবে দলের আরেকটি অংশ মনে করে, মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তানদের জন্য কোটা ঠিক ছিল, কিন্তু এখন তাঁদের নাতিদের জন্য কোটা বহাল রাখা যৌক্তিক নয়।
ফেসবুকে সক্রিয় থাকেন এমন কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের ফেসবুক আইডি ঘেঁটে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোটার পক্ষে কোনো পোস্ট চোখে পড়েনি।
ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও অধীন হলগুলোর নেতাকর্মীদের অনেকে ফেসবুকে লেখালেখির মাধ্যমে কোটার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। হলগুলোর সম্পাদক পদে থাকা একাধিক নেতা কোটার বিরুদ্ধে ফেসবুকে সক্রিয় রয়েছেন।
ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে গোপনে কাজ করেছেন ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী। তাঁদের মধ্যে একাধিক নেতা বর্তমানে কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। ফলে এবার ছাত্রলীগের অনেকেই রাখঢাক না রেখে প্রকাশ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের কথা বলছেন। তাঁরা অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোটার বিরুদ্ধে নিজেদের মতামত তুলে ধরছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলী ও সম্পাদকমণ্ডলীর পাঁচজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘দলের মধ্যে ভিন্নমত থাকতেই পারে। গণতান্ত্রিক চর্চার অংশ এটি। তবে দল যদি এ বিষয়ে কোনো অবস্থান নেয়, তখন সেটি সবাইকে মানতে হবে।’