অনলাইন ডেস্কঃকলকাতা গোয়েন্দা পুলিশ (সিআইডি) ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত সিয়াম হোসেনকে হেফাজতে নিয়েছে। আজ শুক্রবার (৭ জুন) দুপুরে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।ডিএমপি কমিশনার বলেন, সংসদ সদস্য আনার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত সিয়াম নেপালে পালিয়ে ছিলেন। পরে তাকে নেপাল পুলিশ আটক করে।
কলকাতার সিআইডি তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
এর আগে, গত শনিবার (১ জুন) সিয়ামকে নেপালে আটকের খবর পেয়ে সেখানে উড়ে যান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।মঙ্গলবার (৪ জুন) বিকেলে নেপাল থেকে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনি বলেন, ‘নেপাল থেকে সিয়ামকে নেওয়ার জন্য ভারতও চেষ্টা করছে, তাদের কাছেও সিয়াম মোস্ট ওয়ান্টেড। নেপাল কাঠমান্ডু অ্যাক্ট অনুযায়ী অপরাধের ধরণ এবং স্থান বিবেচনা করে ঠিক করবে সিয়ামকে কার কাছে দেওয়া হবে।
যাকেই দেওয়া হোক, তদন্তে কোনো দেশেরই কোনো সমস্যা হবে না। সিয়ামকে পেলে আলামত উদ্ধারের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে।’
সিয়ামের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের কাছে আনঅফিসিয়ালি জানানো হয়েছে। তবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি।
সেখানকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। এছাড়া সেখানকার যেসব হোটেলে সিয়াম ছিল সেখানকার ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান সংসদ সদস্য আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন।
এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ আনোয়ারুল আজিম।
বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচদিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনার নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলেনি তিনবারের এই সংসদ সদস্যের। বুধবার হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পাশের নিউটাউন এলাকায় সঞ্জিভা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে সংসদ সদস্য আনার খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া গেছে রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ।হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার অভিযোগে গ্রেফতার সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, ফয়সাল আলী সাহাজি ওরফে তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানের ৮ দিনের রিমান্ড শেষে আরও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন দেশের আদালত। আর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদকে ১২ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন ভারতের বারাসাতের আদালত।অন্যদিকে, বর্তমানে কলকাতা পুলিশের হেফাজতে থাকা সিয়ামের বিরুদ্ধে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক তার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আমানের সহযোগী সাইফুল মেম্বারকেও রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
এছাড়া আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী কামাল আহম্মেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে ৬ জুন আটক করেছে ডিবি।