প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের জন্য মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনা মূল্যে পাঠপুস্তক বিতরণ উদ্বোধন করেছেন। এ সময় তিনি বলেছেন, ‘আমার জীবনের একটি স্বপ্ন ছিল প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক হওয়া। আমি সেটাই হতে চেয়েছি কারণ ওটা আমার পছন্দ ছিল। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত হয়নি।
আজ রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেন। এরপর দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বাবা বাংলাদেশের মানুষের কথা বললেই তখনকার সরকার জেলে নিয়ে যেত। এতে বারবার আমাদের পড়াশোনা বাধাগ্রস্ত হয়েছে; শেষ স্তর পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করতে পারিনি। যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ডিগ্রিতে ভর্তি হই; তখন ১৯৭৫ এ আমার বাবা-মাকে হত্যা করা হয়।
আমার ছোট বোন আর আমি বিদেশে ছিলাম। আমরা দেশে আসতে পারিনি। প্রায় ছয় বছর বিদেশে রিফিউজি হিসেবে ছিলাম। যে জন্য আর আমার মাস্টার্স ডিগ্রিও শেষ করা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে অনলাইনে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা তৈরি হয়েছে। আমি চাই প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন প্রজন্ম গড়ে উঠবে। সে লক্ষ্য নিয়ে যা যা করণীয় তা করে দিয়েছি। সরকারে আসার পর থেকে শিক্ষকদের সবার বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করা, স্কুল-কলেজ-মাদরাসা এমপিওভুক্ত করেছি। প্রতিটি জেলা-উপজেলায় ছেলে-মেয়েদের একটি করে স্কুল, কলেজ সরকারীকরণ করেছি।
এবার ১ জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন স্তরের তিন কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার ৩৫৪ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭ কপি পাঠ্যপুস্তক বিনা মূল্যে বিতরণ করা হবে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের সংখ্যা হবে ৪৬৪ কোটি ৭৪ লাখ ২৯ হাজার ৮৮৩ কপি।বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ শিক্ষার্থীদের মুখস্থবিদ্যার পরিবর্তে কৌতূহল, জিজ্ঞাসা, গবেষণা ও ভাবনার শক্তিকে জাগ্রত করবে এবং নেতৃত্বের গুণাবলি বিকশিত করবে। শিক্ষককেন্দ্রিক ব্যবস্থা থেকে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষায় উত্তরণের ওপর আমরা গুরুত্বারোপ করেছি। নতুন বিশ্ব পরিস্থিতিতে টিকে থাকার মতো যোগ্য প্রজন্ম গড়ে তুলতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণির অবিচ্ছিন্ন শিক্ষাক্রম উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’