বিকেল ঠিক তিনটা। বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে জনসভাস্থল কানায় কানায় পূর্ণ। ঠিক তখনই ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে জনসভার মঞ্চে ওঠেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভামঞ্চে এসে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জাতীয় পতাকা নেড়ে শুভেচ্ছা জানান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
জনগণও শ্লেগানে শ্লেগানে চারদিক মুখর করে ব্যানার, ফেস্টুন ও পতাকা নেড়ে প্রতিউত্তর দেয়। এরপর জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আঞ্চলিক ভাষায় গান গেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহনাকে স্বাগত জানায় বরিশালবাসী।
এর আগে দুপুর পৌনে একটায় পবিত্র কোরআন পাঠ, গীতা পাঠ, বাইবেল ও ত্রিপিটক পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী জনসভা।
এদিকে জনসভার শুরুতে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুসের সঞ্চালনায় মঞ্চে প্রথম বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান।
জনসভাস্থলে পৌঁছে বরিশালবাসীর উদ্দেশ্যে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা। তাকে একনজর দেখার জন্য সকাল ৯টা থেকে বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে মিছিল-ফ্যাস্টুনসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী যোগ দিয়েছেন সভাস্থলে।
এর আগে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভায় যোগ দেন। এর পাঁচ বছর পর আজ নির্বাচনী সভায় যোগ দিয়েছেন তিনি।
এর আগে যদিও চলতি বছরের মার্চ মাসে বরিশাল সফরের কথা ছিল শেখ হাসিনার, পরে তা স্থগিত করা হয়।
এদিকে জনসভা মঞ্চ থেকে আগেই জানানো হয়েছে, জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকার মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইবেন। তবুও অনুসারীদের নিয়ে জনসভায় এসেছেন বরিশাল-৩ আসনের ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আতিকুল ইসলাম আতিক। তার মতে, বরিশাল-৪ আসনের পঙ্কজ নাথ, বরিশাল-৫ আসনের সালাহউদ্দিন রিপন এবং বরিশাল ৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সামসুল আলম চুন্ন মঞ্চে জায়গা পেয়েছেন।
বরিশাল সদর আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহউদ্দিন রিপন বলেন, ছোটবেলা থেকেই ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম।
এই রাজনীতির কারণে এলাকাছাড়া হয়েছি। আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার লোক। তাই তার জনসভায় এসেছি।
তিনি আরো বলেন, যখন দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ফরম সংগ্রহ করেছিলাম তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- আমি একজনকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছি। কিন্তু নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিলাম তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার। তাই আমি প্রার্থী হয়েছি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও মঞ্চে ওঠার অনুমতি পেয়েছেন জানিয়ে বরিশাল-৬ আসনের ট্রাক প্রতীকের মোহাম্মদ সামসুল ইসলাম চুন্নু বলেন, কে বলেছে আমরা উঠতে পারব না। আমি এখন গিয়ে মঞ্চে উঠব। শুধু তাই নয়, ভোটে জিতে দেখিয়ে দেব মার্কা নয়, ব্যক্তিই আসল।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, বলা নেই, কওয়া নেই রাজনীতিতে অবদান কিংবা ত্যাগ কিছুই নেই। হুট করে নৌকা নিয়ে আসবে, আর নেতাকর্মীরা মেনে নেবেন, তা হবে না।