গির্জার ভেতর-বাইরে নানা রঙের আলোকসজ্জা। ভেতরে ক্রিসমাস ট্রিতেও আলোর ঝলকানি। গির্জার প্রাঙ্গণে তৈরি করা হয়েছে গোশালা। এর পাশে রাখা হয়েছে সান্তা ক্লজ।
ঢাকাসহ সারা দেশের গির্জার ভেতরটা আজ এমনই বর্ণিল। শুধু গির্জাই নয়, নামিদামি হোটেলগুলোর ভেতরেও রয়েছে এমনই নানা আয়োজন। এত সব আয়োজন খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিনকে কেন্দ্র করে।
আজ ২৫ ডিসেম্বর, শুভ বড়দিন।
সারা বিশ্বের খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের মতো বাংলাদেশের খ্রিস্ট ধর্মের মানুষও ধর্মীয় আচার, প্রার্থনা ও আনন্দ-উৎসবের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করবেন। বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা আলাদা বাণী দিয়েছেন। আজ দেশে সরকারি ছুটি রয়েছে।
খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট আজকের এই দিনে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের বেথলেহেম শহরের এক গোয়ালঘরে জন্মগ্রহণ করেন।
খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, যিশুখ্রিস্ট ঈশ্বরের পুত্র। পৃথিবীতে সৃষ্টিকর্তার মহিমা ও শান্তির বাণী প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালনা করার জন্য যিশুখ্রিস্ট জন্ম নিয়েছিলেন। দুই হাজার ২২ বছর আগে তিনি ঐশ্বরিক শক্তিতে মা মেরির কোলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ৩০ বছর বয়সে প্রকাশ্যে ধর্মীয় বাণী প্রচার শুরু করেন।
রঙিন বাতি দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো, বিশেষ প্রার্থনা, শিশুদের মধ্যে উপহার বিতরণ এবং স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এই উৎসবের মূল অনুষঙ্গ।
গির্জায় প্রার্থনা শুরু ও শেষের পর গাওয়া হয় বড়দিনের বিশেষ গান ও বন্দনা সংগীত। বড়দিন উপলক্ষে অনেক পরিবারে কেক তৈরি করা হবে, থাকবে বিশেষ খাবারের আয়োজন। এ ছাড়া দেশের অনেক অঞ্চলে আয়োজন করা হয়েছে কীর্তনের পাশাপাশি ধর্মীয় গানের আসর।
গতকাল রাতে বিভিন্ন গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকাল থেকে বড়দিনের প্রার্থনা শুরু হবে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিওতে দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করা হবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘ধর্মের মূল কথাই হচ্ছে মানুষ হিসেবে মানুষের সেবা করা। সব ধর্মই মানুষের কল্যাণের কথা বলে। তাই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ।’
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। সব শ্রেণি-পেশার জনগণের উন্নয়নই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব সম্প্রদায়ের মানুষের মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি।’