মণিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধি:
যশোরের মণিরামপুরে রাতের আঁধারে এক কৃষকের বাগানের বেশ কিছু ড্রাগন গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন এ জেড এম মারুফ-উল ইসলাম দিলশাদ নামের ওই তরুণ উদ্যোক্তা । তিনি মণিরামপুর উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের ডাঃ ছবেদ আলীর ছেলে। দিলশাদ ইঞ্জিনিয়ার পেশা ছেড়ে উদ্দ্যোক্তা হয়ে গড়ে তোলেন আসর আলী এগ্রো বাংলাদেশ লিমিটেড নামে ড্রাগন বাগান। তার বাগানে প্রতিদিন ৪/৫ জন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এই ঘটনায় গত ৩০শে অক্টোবর সোমবার বিকেলে ৩ জনকে বিবাদী ও অজ্ঞাতনামা ৩-৪জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী । এর আগের দিন রবিবার গভীর রাতে মণিরামপুর উপজেলার চালকিডাজ্ঞা মাঠে অবস্থিত বাগানটিতে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১১৫ শতাংশ জমিতে ড্রাগন ফলের গাছ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে দীর্ঘদিন ধরে পরিচর্যা করে আসছেন দিলশাদ। বর্তমানে ড্রাগন গাছগুলোতে ফল ধরা শেষ হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার রাতের আঁধারে কে বা কারা তাঁর বাগানের চৌদ্দ শত গাছের মধ্যে প্রায় ৬০০ গাছ কেটে ফেলে।
এ জেড এম মারুফ-উল ইসলাম দিলশাদের বাগানের দেখভাল করা ব্যক্তি মো:বাবর আলী জানান, গত রবিবার প্রতিদিনের মতো সকাল ৭ টার দিকে জমিতে ড্রাগন গাছ দেখতে যান। এ সময় তিনি দেখতে পান কে বা কারা জমির ড্রাগন গাছগুলো কেটে নষ্ট করেছে। এ সময় তিনি আরো খেয়াল করেন ,ড্রাগন জমির কয়েকটি খুটি ভেজ্ঞে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এসব দেখে দ্রুত খবর দেন মালিককে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মনিরামপুর থানাধীন চালকিডাঙ্গা গ্রামে দিলশাদের একটি মাছের ঘের আছে। মাছের ঘের নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, প্রায় সময় হরেরগাতী গ্রামের আঃ আলীম মেম্বারের দুই ছেলে মেহেদী হাসান (২৪), ২। সাগর হোসেন (১৮),সহ আব্দুলের ছেলে স্বাধীন হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলো ঘের অথবা ড্রাগন বাগানের ক্ষয়ক্ষতি করবে। অভিযোগে দেওয়া ২ নং সাক্ষী আসতুল্লাহ গাজীর ছেলে সাবেক মেম্বার খুররাম বলেন, আমি ওই ঘটনা কিছুই জানিনা তবে লোকমুখে শুনেছি। পরবর্তীতে জানতে পারি আমাকে অভিযোগের সাক্ষী করা হয়েছে। ভোজগাতী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের দুই বারের ইউপি সদস্য আব্দুল আলীম বলেন, আমার দুই ছেলেকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই ঘটনায় ফাসানো হচ্ছে এবং চক্রান্ত করে আমাকে এবং আমার পরিবারকে সমাজের কাছে হেয় এবং সম্মান হানি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যে ঘেরের শত্রুতার কথা বলা হচ্ছে সেখানে আমার বিয়াই গাজী রহমান মাত্র ৯ দিন মাসিক বার হাজার টাকা বেতনে কেয়ার টেকারের কাজ করেছে। ঘেরের কেয়ার টেকার গাজী রহমান বলেন, আমি মাত্র ৯ দিন সেখানে কাজ করেছি। আমার বাড়ি সাতক্ষীরা আমি কাউকে চিনিনা। আমার সাথে সেখানে কিছু লোকের সাথে ঝামেলা হয়। তারপর নিজেই কাজ ছেড়ে দিছি। কি কারণে কাজ ছেড়ে দিলেন এমন প্রশ্নে বলেন,নিজের জীবনের নিরাপত্তার জন্য ছেড়ে দিয়েছি এবং ওই ঘেরের মালিক দিলশাদের সাথে অনেকের শত্রুতা আছে।
অভিযোগে ১ নং বিবাদী মেহেদী বলেন, আমাদের কে বিভিন্ন সময় বাড়িতে এসে দিলশাদের অনুসারীরা ভয়ভীতি সহ জীবন নাশের হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। যা স্থানীয় সবাই জানেন। আমরা ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না।
ভুক্তভোগী এ জেড এম মারুউল ইসলাম দিলশাদ বলেন,আমি অনেক কষ্ট করে ড্রাগন বাগান করেছি, যারা আমার ফলন্ত গাছ কেটেছে তাদের আমি কঠোর শাস্তি দাবি করছি । আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার অচিন্ত্য কুমার ভৌমিক বলেন, আমরা সংবাদ পেয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।
মণিরামপুর থানার ওসি শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, আমি তদন্ত ওসি কে সাথে নিয়ে নিজে ড্রাগন বাগান সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।