রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহী পদ্মা আবাসিক চন্দ্রিমা থানা এলাকা ২৬ নং ওয়ার্ডে প্যারামাউন্ট স্কুল সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠে কল্যাণ সংঘ এর নামে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ সুত্রে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্যারামাউন্ট স্কুল মাঠের পাশে ঈদগাহ মাঠ দখল করে একটি চন্দ্রিমা গ্রন্থাগার সংস্কৃতি কেন্দ্র টিন সেড ঘর বন্ধ অবস্থায় দেখা যায়। চন্দ্রিমা এলাকার বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, আমাদের এই মাঠে বছরের দুটি ঈদের জামাত হয় জামাতে এলাকার হাজার হাজার মানুষ নামাজ পড়ে এবং এলাকার কেউ মারা গেলে মৃত ব্যাক্তিদের জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় এমাঠে, এছাড়া তাফসিরুল কোরআন মহাফিল নতুন হাফেজদের পাগড়ী পরিয়ে বিদায় অনুষ্ঠান হয় এখানে,চন্দ্রিমা কল্যান সংঘ”এর তত্ত্বাবধানে দশ বারো জনের একটি দল প্রতি রাত্রি সন্ধা ৭টা হইত রাত্রি ১১.৩০ মিনিট পযর্ন্ত ব্যাডমিনটন খেলতে থাকেন। তাদের চিল্লাচিল্লিতে শব্দ দৃষণ হয় এতে গভীর রাত পযর্ন্ত এলাকায় বসবাসরত জনগণকে হৈ চৈ চেচামেচি সহ্য করতে হয়, অন্য দিকে ছেলেমেয়েদের লেখা পড়ার অভূত ক্ষতি হয়, অসুস্থ ব্যাক্তি বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাদের অসুস্থতাও বাচ্চারা ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে উঠে। দিন দিন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এই এলাকার মানুষ, গ্রন্থাগার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ঘরটি বন্ধের বিষয় জানতে চাইলে বলেন, সন্ধ্যার পরে খুলে, খুলার পরপরই খেলাধুলা শুরু হয় । বাচ্চাদের অভিভাবকরা,এই বিষয় গুলি চন্দ্রিমা কল্যাণ সংঘ এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে এবং খেলোয়ারগণ কে বিনয়ের সাথে এই বিষয়গুলো কয়েক বার অবহিত করা হলেও কোন লাভ হয়নি। আমরা বাধ্য হয়ে চন্দ্রিমা থানা সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছি আমাদের কাছে অভিযোগের রিসিভ কপি আছে। এই শব্দ দৃষণ, খেলা যদি বন্ধ না হয় তাহলে কপিগুলো নিয়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হবো জানিয়েছে অভিযোগকারীরা। অভিযোগের বিষয়টি কল্যাণ সংঘ’র কর্মকর্তারা অবগত হইলে খিপ্ত হয়ে আরও জোরে সোরে চিল্লাচিল্লি করে খেলে। এদিকে
মো: শরিফ, মো: সাইফুল, মো: আবেদুর রহমান, মো: মুকুল হোসেন সহ দশ বারো জন বলেন, রাত্রিতে চন্দ্রিমা কল্যাণ সংঘর লোকজন আমাদের বাড়ির পাশে প্রাচীর ঘেঁষে হৈ হাল্লা চিল্লাচিল্লি করে তাতে ঐ রাতে ঘুমানোর কোনো পরিবেশ থাকে না, এমন কি খেলা শেষ না হওয়া পযর্ন্ত বসে বসে রাত কাটাতে হয়।
চন্দ্রিমা এলাকার মো: মানিক চাঁদের ছেলে মাসুদ রানা ও মসজিদের খাদেম মোন্তাজ আলী সহ একাধিক ব্যাক্তি জানান এরা কল্যাণ নামে এলাকায় আড্ডা খানা খুলে বসে আছে,পদ্মা আবাসিক জামে মসজিদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মৃত রেজুউয়ানের স্ত্রীর গত ১৩- ১০-২০২৩ ইং তারিখে রাত্রি দশ ঘটিকার সময় মৃত ব্যাক্তির জানাযা অনুষ্ঠিত হয় মাইক বা বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকলেও তারা বিদ্যুৎ ব্যবহার করার সুযোগ করে দেয় নাই। সেখানে মরহুমার জানাযার নামাজ অন্ধকারের মধ্যে পড়তে হয়েছে বলে এলাকাবাসী তীব্র নিন্দা জানায় উপস্থিত থাকা মুসলিমগণ। পাশে হজের মোড় এলাকার কয়েকজন শিক্ষক বলেন, অনেক সময় পুরাতন বই গ্রন্থাগারে পাওয়া যায় সেখানে বই পড়া বা কবিতার বই পড়া, পেপার পড়াতে আসা যাওয়া এগুলো গ্রন্থাগারের কাজ, কিন্ত রাত্রিরে অনেকেই বাসা বাড়িতে নিরবে লিখাপড়া করে, রাত্রির চিল্লাচিল্লি অনেক দূর পযর্ন্ত শব্দ দৃষণ বেশি হয় তাতে বাচ্চাদের লিখাপড়ার সমস্যা হয় যারা হার্টের রুগী বিছানায় অসুস্থ হয়ে আছেন এই সব রুগীদের সমস্যা আরও বেশি হয়, আর ব্যাডমিনটন খেলবে স্টেডিয়াম মাঠ আছে, বা টেনিস কমপ্লেক্স আছে, এই গুলো খেলার যায়গা গ্রন্থাগারে কেউ বই পড়লে তাদেরও পড়ার সমস্যা হবে। গ্রন্থাগার খেলার জায়গা নয় এটা বই পড়ার জায়গা।
অভিযোগের বিষয়টি চন্দ্রিমা থানায় খোঁজখবর নিলে জানা যায়, অভিযোগের ঘটনা সত্যতা যাছাই বাছাই এর জন্য তালাই মারি পুলিশ ফাড়ির ইনর্চাজ এস আই প্লাবন কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । দায়িত্বরত এস আই, এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগটি আমার কাছে পাঠিয়েছে ওসি সাহেব। আমি চন্দ্রিমা কল্যাণ সংঘ এর যারা দায়িত্বে আছে তাদেরকে বলেছি গভির রাত পযর্ন্ত যেন না খেলা হয়। যদি আপনাদের কেউ খেলাধুলা করে সেটি যেন রাত্রি আটটার মধ্যে শেষ করবেন।
রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ( আর ডিএ) অফিসে খোঁজ নিলে কর্তৃপক্ষ জনান, আর ডিএ এর চন্দ্রিমা এলাকার মাঠ কাউকে বা কোন প্রতিষ্ঠানকে একক ভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয় নাই। যদি কেউ বিনা অনুমতিতে মাঠের মধ্যে বিল্ডিং কিংবা পাকা কোনো কাজ নির্মাণ করে থাকে তাহলে আইন মোতাবেক সেটা আরডিএ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে।
অভিযোগ এর বিষয়ে চন্দ্রিমা কল্যাণ সংঘ এর সভাপতি মোঃ সাদরুল ইসলাম এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখানকার খেলাধুলার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছে আমি জানি, এখানে যারা খেলাধুলা করে তারা ভদ্র এবং বড় মাপের মানুষ সবাই চাকুরিজীবি, অফিস শেষ করে বাসায় খাওয়া দাওয়া শেষে একটু খেলাধুলার জন্য এখানে আসে, অভদ্রদের মত চিল্লাচিল্লি করতে পারেননা। যারা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আর ডিএ) থেকে প্লট গ্রহণ করেছে তারাও খেলাধুলা করে। এখানে ১৩ অক্টোবর রাত্রিরে মরহুমার জানাযার নামাজ হয় সেই দিন আমি ঢাকায় ছিলাম, কিন্ত যারা অভিযোগ দিয়েছে তারাও তো একটা লাইটের ব্যবস্থা করতে পারত। যে বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছে ঐ অভিযোগ এর কোন ভিত্তি নাই।