ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহ সদরের দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় একটি সুনামধন্য স্কুল। এই স্কুলে প্রায় আটটি গ্রামের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে। স্কুলটি ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত। স্কুলটি এক সময় ঝিনাইদহ সদরের মধ্যে একটি সুনামধন্য স্কুল হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ২০২৩ সালের জুন মাসে ম্যানেজিং কমিটির একটি নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে একজন অদক্ষ এবং অযোগ্য ব্যক্তিকে সভাপতি মনোনীত করা হয়। তার ছেলেমেয়ে ওই স্কুলে লেখাপড়া করে না। তাহলে তিনি কিভাবে সভাপতি হলেন। তিনি জোর করে বিপরীত প্যানেলের ভোটারদের হুমকি ধামকি দিয়ে সভাপতি হন। এই ভোটটি যে সাধারণ ভোটারকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে করা হয়েছে তার বিপরীতে বিরোধী প্যানেল মেম্বার মোঃ ফজলুর রহমান বিজ্ঞ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটে একটি মামলা দায়ের করেন, যার নম্বর ৩৭৫/২৩ মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে চলমান রয়েছে, কিন্তু এর মাঝে সভাপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান করে রেখেছে। কোন ক্ষমতা বলে এটাই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে সাধারণ জনগণকে। এরই তথ্যসূত্র মতে জাতীয় দৈনিক ভোরের চেতনা, জাতীয় দৈনিক ঢাকা, পত্রিকার সাংবাদিকরা নিউজ সংগ্রহ করতে গেলে সভাপতির নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাস বাহিনী হামলা করে, সেখানে প্রতিনিধি ও ক্যামেরাম্যান সহ আহত হন। এই স্কুলে মোট ছাত্র-ছাত্রী আছে ৪১০ জন।
ছাত্রী ১৫৭ জন এবং ছাত্র আছে ২১৩ জন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে এই হাইস্কুলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতিটি স্কুলে একটি করে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করে দিয়েছেন। কিন্তু সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় এখানে ১৭ টি ল্যাপটপ আছে বলে সভাপতি জানান, কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে সেখানে আছে মাত্র ১৩ টি ল্যাপটপ এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, প্রদর্শন বোর্ড আছে ফাকা।পড়ে আছে এলইডি মনিটর, রুমে ঢুকে দেখা যায়, ল্যবের যিনি দায়িত্বে আছেন, তিনি তেমন কিছু জানেন না, ল্যবের সহকারী শিক্ষিকা শারমিন সুলতানা জানান সভাপতি প্যানেলে আমি না থাকায় তিনি আমাকে দেখতে পারেন না, এখানে কোন সমস্যার কথা বললে তিনি কর্ণপাত করেন না, প্রধান শিক্ষক উনার কথামতোই চলে, নেট প্যাকেজ সময় শেষ হলে বন্ধ হয়ে যায় অনলাইন কার্যক্রম। প্রধান শিক্ষককে বললে তিনি বলেন আর লাগবেনা, সপ্তম শ্রেণীর একজন শিক্ষার্থীর কাছে আমরা জানতে চাই শেখ রাসেল কে তিনি তা বলতে পারেন না, কি শিক্ষা হচ্ছে এই দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে? শুধু কি সভাপতি নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা, এই স্কুলে এখন কিছু তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর নিয়োগ বাণিজ্য চলছে। প্রার্থীদের কাছ থেকে ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা নিয়ে তাদের মনগড়া জনবল নিয়োগ করবে। বিজয়পুর গ্রামের আবুবক্কার’র সাথে সাংবাদিকদের কথা হলে জানান, এই স্কুলের সভাপতির স্কুলের উন্নয়নে কোন মাথা ব্যাথা নেই, উনি টাকা নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য চলমান রেখেছেন। এখানে শিক্ষার পরিবেশ খুবই খারাপ, স্যারদের মতে গ্রুপিং, ঠিকমতো ছাত্রদের লেখাপড়া আগের মতো এখন আর হয় না। স্কুলের খেলার মাঠের জমি পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছে এই সভাপতি। দেশরত্ন শেখ হাসিনার বাংলায় কেউ অন্যায় করে ক্ষমতায় থাকবে আর শিক্ষা ব্যবস্থা যদি এভাবে ধ্বংস হয়ে যায় জাতি আজ কোথায়। তাই এর সঠিক ব্যবস্থা নিলে আমি মনে করি স্কুলটি সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে চলবে অতীতের মত, আমরা শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখি, তিনি এর সুষ্ঠু সমাধান পূর্বক সুন্দর শিক্ষাঙ্গন উপহার দেবেন বলে আমাদের সকলের প্রত্যাশা। বিজয়পুরের বিল্লাল মেম্বারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এই সভাপতি এ স্কুলে আসার পর থেকে তিনি যে স্বেচ্ছাচারিতা অনিয়ম এবং দুর্নীতির আখড়া হিসেবে পরিণত করেছে আমি তার ধিক্কার এবং নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ এটিএম আত্তাবুর জামান বলেন, সভাপতি আমাকে হুমকি দিয়ে বলে তুমি আমার নির্দেশ মত চলবে তা না হলে নোটিশ করব এবং সহকারী শিক্ষক বৈদ্যনাথ বিশ্বাস জানান, সভাপতির আচার-আচরণে আমরা স্কুলের শিক্ষকরা ভয়ে কিছু বলতে পারি না। বললে তিনি সমস্যা করবেন বলে আমাদের নানান ভাবে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। কমিটির একজন নির্বাচিত সদস্য শ্রী গোসাই তিনি বলেন, সভাপতি আমাকে দেখতে পারেনা, কোন মিটিংয়ে আমাকে চিঠি পাঠায় না এবং আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করে আমি সংখ্যালঘু বলে। তিনি বলেন শিক্ষার পরিবার যদি এরকম হয় আমি চাই দেশরত্ন শেখ হাসিনা আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার, তার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি এবং সেই সাথে ঝিনাইদহ মান্যবর জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এর কাছে জোর দাবি জানাই এরকম সভাপতি যদি স্কুল প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করলে ধ্বংস হয়ে যাবে শিক্ষা ব্যবস্থা। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার যে লালিত স্বপ্ন দেখে গেছেন, তারই তো সুযোগ্য কন্যা আজকের সফল প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা শিক্ষাঅঙ্গনের যে পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন তা আজ প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু কিছু ব্যক্তি তাদের ব্যক্তিগত কায়েমি স্বার্থ হাসিল করার জন্য শেখ হাসিনার উন্নয়নকে ধুলিস্যাৎ করে দিছে। যা অত্যন্ত দুঃখ এবং কষ্টের, এই সভাপতির অপসারণসহ তিনি যে অনিয়ম গুলো করেছেন তার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হওয়া দরকার। আমরা সাধারণ জনগণ। আমরা চাই দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি কলঙ্কমুক্ত, সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতা মুক্ত, নিয়োগ বাণিজ্য মুক্ত, শিক্ষার সঠিক পরিবেশ এবং ছেলে মেয়ে যাতে সুন্দরভাবে লেখাপড়া করে দেশ ও জাতির জন্য সুনাম বয়ে আনতে পারে। দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক এটি আমাদের অভিভাবকদের সকলের দাবি সাধারণ জনগণ ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে।