Thursday , 21 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
মাফিকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে কোটচাঁদপুরের ঢাকা মটরস’র শোরুম এর মালিক
--প্রেরিত ছবি

মাফিকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে কোটচাঁদপুরের ঢাকা মটরস’র শোরুম এর মালিক

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
চলতি মাসের ১৬ তারিখে কোটচাঁদপুর শালকোপা গ্রামে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গলায় গামছা বাঁধা অবস্থায় ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয় মাফুজুর রহমান মাফির। মাফির এরকম মৃত্যু কেউই মেনে নিতে পারেনি। সদা হাসি খুশি একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে পরিবার ও বন্ধু মহলে।

কোনো রকম কারণ ছাড়া এভাবে আত্মহত্যার বিষয়টি সকলের মনে দাগ কেটে যায়। তার পরেই উন্মোচিত হয় মাফির আত্মহত্যা করার মূল রহস্য।

জানা যায়, মাফুজুর রহমান মাফি, পিতা- আকিমুল ইসলাম কোটচাঁদপুর পৌর কলেজের ইন্টারমিডিয়েট এর ছাত্র। মাফুজুর রহমান মাফি কোটচাঁদপুরের ঢাকা মটরস থেকে ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকায় একটি টিভিএস কোম্পানির এপাচি 4v মোটরসাইকেল কিস্তিতে ক্রয় করে। সকল কিস্তির টাকা পরিশোধের পরে আরো ৭০ হাজার টাকা দেবার কথা ছিল চলতি মাসের ২৫ তারিখে। কিন্তু ঢাকা মটরস এর মালিক ১৬ তারিখে মাফিকে তার শো-রুমে ডেকে মোটরসাইকেলটি কেড়ে রাখেন এবং বিভিন্ন অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন।
আলমগীরের শো-রুমের ১৬ তারিখের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মাফি তার বাইকটি নিয়ে শোরুমের সামনে আসে, সেখানে পূর্বেই আলমগীর তার লোকজন নিয়ে অপেক্ষা করছিল। মাফি আসার পরেই মাফির বাইকটি আলমগীরের নির্দেশে একজন নিয়ে চলে যায়। আর মাফিকে আলমগীর শোরুমের ভেতরে ডেকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন ও বলেন টাকা না দিতে পারলে বাইক পাবি না। টাকা না থাকলে বাড়ি যেয়ে আত্মহত্যা করো। এছাড়াও বিভিন্ন মানসিক টর্চার করা হয় তাকে।
মাফুজুর রহমান মাফি সেই অপমান সইতে না পেরে তার নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে নিজের গামছা গলায় দিয়ে আত্মহত্যা করে। মাফির আত্মহত্যার মূল কারণ জানার পরে পরিবারের ও গ্রামের মানুষ ফুঁসে উঠেছে এই হত্যার বিচারের জন্যে। মাফির মা,চাচা বন্ধু ও গ্রামের সকল মানুষের দাবি আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী আলমগীরকে কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক।

মাফিকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করার বিষয়ে ঢাকা মটরস এর আলমগীরের সাথে কথা বলতে সরেজমিনে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। কিন্তু অভিযুক্ত আলমগীরের মা সাংবাদিকদের জানান, মিথ্য কথা বলে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমার ছেলে কোনো দোষ করেনি। এদিকে কোটচাঁদপুরের স্থানীয় বাসিন্দা জামাল উদ্দিন জানান,এই আলমগীর ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় অনেক দামি দামি মোটরসাইকেল যাকে তাকে দিয়ে দেয়। কিস্তিতে অধিক সুদের শর্তে। পরবর্তীতে টাকা না দিতে পারলে বা দেরি হলে বাইক আটকে রেখে বা ক্রেতাকে আটকে রেখে নির্যাতন করেন। এই মাফিকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে এই আলমগীর।
এই হত্যার কঠিন বিচার হোক।

পরিবারের একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন মাফির মা। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে আর্তনাদ করে বারবার শুধু বলছেন, আমার ছেলেকে আলমগীর হত্যা করেছে। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। আগামী রবিবারে আমরা ঝিনাইদহের বিজ্ঞ আদালতে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে অভিযুক্তদের নামে মামলা দায়ের করবো। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচার কার্যে সহযোগিতা করার জন্যে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার এর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply