বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গত এক দশকে এমন উচ্চতায় পৌঁছেছে যে কেউ একে আর উল্টোপথে নিয়ে যেতে পারবে না। ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও জি-২০র প্রধান সমন্বয়ক হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।
শ্রিংলাকে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। শ্রিংলা বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে স্পষ্ট করেন ‘নয়া প্রজন্ম-নয়া দিশা’।
শ্রিংলা বলেন, ‘সম্পর্ক এখন পৌঁছে গেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বর্ণনা অনুযায়ী ‘সোনালী আধ্যায়ে’। মোদির সরকারের গত নয় বছরে বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে যে সম্পৃক্ততা গড়ে উঠেছে তা গত ৪০ বছরে কখনো হয়নি। এই কারণেই এটি অপরিবর্তনীয়।’ শ্রিংলা আরো বলেন, বাংলাদেশ পঞ্চম বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হয়েছে।
বাণিজ্যের পরিমাণ ১৮০ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। আগামী দিনে এটি আরো বাড়বে। ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত অবকাঠামো, বিশেষ করে রেল ও বন্দর সংযোগে বিনিয়োগ করেছে। আর এটি উভয় দেশের জন্য পারস্পরিক সুবিধা দিয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বেড়েছে, ভারতের রপ্তানিও বাড়ছে।
বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগের বিষয়ে শ্রিংলা বলেন, আমরা একটি ব্যবস্থা তৈরি করেছি যার আওতায় ভারত বাংলাদেশিদের জন্য বছরে ১৫ লাখ ভিসা দিচ্ছে। আগে এটি ছিল মাত্র পাঁচ লাখ। এখন তা ২০ লাখে পৌঁছেছে।
হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, ভারতের কোনো অভ্যন্তরীণ নীতি বাংলাদেশের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।
ভারতে নাগরিকপঞ্জি ও নাগরিকত্ব আইন সংশোধন নিয়ে বিতর্কের সময় গুজব ছড়িয়েছিল যে অনেক মুসলিম বাংলাদেশে যাবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নেতৃত্বের শীর্ষ থেকে নিম্ন পর্যন্ত আমরা সফলভাবে বোঝাতে পেরেছি যে আমাদের প্রতিবেশীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এমন কিছু করা হবে না।’
চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের বিষয়ে শ্রিংলা বলেন, ভারত চীনের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। কিন্তু ২০২০ সালে চীন সীমান্তে সব ধরনের সমঝোতা লঙ্ঘন করেছে। সম্পর্কের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
শ্রিংলা বলেন, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র পরাশক্তি এবং প্রযুক্তিগত এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বিশ্বের শীর্ষে রয়েছে। ভারতের প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের মূল সরবরাহ আসে রাশিয়া থেকে। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকেও গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি ভারতের প্রয়োজন।