প্রতি ওয়ার্ডে প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এসব কেন্দ্রে ইসিজি, এক্স-রে, সিবিসি, টিবি, ডেঙ্গু, কিডনি, লিভার, ব্লাড, আরবিএস, থাইরয়েড, ডায়াবেটিসসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। নতুন ওয়ার্ডগুলোয় জায়গা সংকট হলে স্থাপন করা হবে মোবাইল ক্লিনিক। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিরাপদ এবং কম সময়ে চিকিৎসাসেবা দিতে এই পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
এসব কেন্দ্রে মেডিক্যাল পরীক্ষাসহ প্রাথমিক জরুরি চিকিৎসাসেবা পাওয়া যাবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এসব কেন্দ্রে নারীদের জন্য আলাদা মাতৃত্বকালীন চিকিৎসাসেবা এবং অন্য যাঁরা চিকিৎসাসেবা নেবেন তাঁদের জন্য আলাদা কার্ড করা হবে এবং তাঁদের মেডিক্যাল হিস্ট্রি সংরক্ষণ করা হবে। নতুন ওয়ার্ডগুলোয় জায়গা সংকটের কারণে মোবাইল ক্লিনিক স্থাপন করে সেবা দেওয়া হবে। এসব চিকিৎসাকেন্দ্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বসবেন আর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য স্থাপন করা হবে আধুনিক সরঞ্জাম।
নামমাত্র মূল্যে সিটি করপোরেশনবাসী পাবে এসব সেবা। প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চিকিৎসাকেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হবে বিদেশি অর্থায়নে। নতুন ও পুরনো ওয়ার্ডে কিভাবে এই চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করা যায় বর্তমানে তার সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। নতুন ওয়ার্ডগুলোয় সরকারি হাসপাতাল বা প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র না থাকায় সেখানকার বাসিন্দারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বিপাকে পড়ছে।
ফলে নতুন ওয়ার্ডগুলোর বাসিন্দাদের চিকিৎসাসেবা কিভাবে নিশ্চিত করা যায় তা বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
সূত্র জানায়, ডিএনসিসি কেন্দ্রগুলো নির্মাণের পর কোনো এনজিও বা প্রতিষ্ঠান দিয়ে তা পরিচালনা করা যায় কি না তাও খতিয়ে দেখছে। কারণ ডিএনসিসি চাচ্ছে যাতে ন্যূনতম ফি দিয়ে সেবা গ্রহীতারা সঠিক ও নির্ভুল পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেবা পান।
ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জোবায়দুর রহমান বলেন, ‘৫৪টি ওয়ার্ডে প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে এর সম্ভাব্যতা এবং স্থান নির্ধারণের কাজ চলছে। তিনি বলেন, ‘এই কাজগুলো একটি প্রকল্পের মাধ্যমে করা হবে। প্রকল্পের নাম এখনো ঠিক করা হয়নি। এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) অর্থায়ন করবে। তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির জন্য কিছু আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে। চুক্তির পর পাঁচ বছরের মধ্যে তারা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। সরকারও কিছু অর্থায়ন করবে। ফলে বর্তমানে চলছে এর সম্ভাব্যতা যাচাই।’
ডিএনসিসির মেয়র বলেন, ‘নগরবাসীর চিকিৎসাসেবা সহজ ও আধুনিকায়ন করতে উত্তর সিটির ৫৪টি ওয়ার্ডে প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র করা হবে। কেন্দ্রগুলোতে রোগীর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে রোগীর রোগের তথ্য সংরক্ষণ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্রের চিকিৎসক যদি মনে করেন কোনো রোগীকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে (মহাখালী ডিএনসিসি হসপিটাল) পাঠাতে হবে তবে সেখানে রেফার করবেন। এই ক্ষেত্রে রোগীর নতুন করে তথ্য দিতে হবে না। হাসপাতালে গিয়ে আইডি নম্বর বললে তাকে প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে।’