হজ ফ্লাইট শুরুর দিনেই ১৪০ আসন খালি রেখে উড়ল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ। উচ্চমূল্যের টিকিট, আসন সংকটের মধ্যেই গতকাল রবিবার বিজি৩৩১ ফ্লাইটে এই ঘটনা ঘটেছে। অপেক্ষায় থাকার পর শেষ পর্যন্ত জানা গেল, ১৪০ হজযাত্রীর কারোরই ভিসা হয়নি। এমনকি টিকিট বাতিল করেনি অভিযুক্ত ট্রাভেল এজেন্ট জান্নাত ট্রাভেলস।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভিসা হয়েছে কি না, তা আগেই পরীক্ষা করা উচিত ছিল। আমাদের পাঁচ-ছয় ঘণ্টা আগেও জানানো হলে আমরা অন্য যাত্রী নিয়ে যেতে পারতাম। এই সংকটের সময়ে আমাদের ১৪০টি আসন খালি যাওয়া খুবই দুঃখজনক। এটার প্রভাব অন্য ফ্লাইটেও পড়বে। আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাবেক বোর্ড সদস্য ও এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়, বিমান, হজ ক্যাম্প, হাবের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণেই এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। প্রায় প্রতিবছর এই ঘটনা ঘটছে। আগে থেকে সতর্ক হলে এই লোকসান এড়ানো যেত হয়তো। এ বছর সৌদি কর্তৃপক্ষ ভিসা সহজ করেছে। সনাতনি ভিসার বদলে চালু করেছে অনলাইন ভিসা। তার পরও এই ঘটনা কেন ঘটল, তা খতিয়ে দেখে যাদের গাফিলতি আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
অনিশ্চয়তায় পড়া হজযাত্রীরা জানান, গতকাল দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিমানে সৌদি আরবের জেদ্দা যাওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে এসে তাঁরা জানতে পারেন যে তাঁদের ভিসা হয়নি। এই অবস্থায় তাঁদের না নিয়েই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নির্ধারিত ফ্লাইটটি চলে যায়।
এক হজযাত্রী জানান, হজ এজেন্সি জান্নাত ট্রাভেলসের মাধ্যমে তাঁদের সৌদি আরবে যাওয়ার কথা ছিল। এজেন্সির পক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়েছে, কারিগরি ত্রুটির কারণে সময়মতো ভিসা হয়নি।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এ বছর এক লাখ ২২ হাজার ২২১ জন বাংলাদেশি হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে বিমান ৬১ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী পরিবহন করবে। প্রি-হজে মোট ১৬২টি হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে বিমান। হজযাত্রী পরিবহনে বিমানের নিজস্ব বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআরের পাশাপাশি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার ব্যবহৃত হচ্ছে।
বিমানের প্রথম হজ ফ্লাইট বিজি৩০০১ গতকাল ভোর ৩টা ২০ মিনিটে ৪১৫ জন যাত্রী নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জেদ্দায় পৌঁছেছে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টায়। গতকাল বিমানের পাঁচটি ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটের মাধ্যমে মোট দুই হাজার ৯৫ জন হজযাত্রীর ঢাকা থেকে জেদ্দার উদ্দেশে যাত্রা করার কথা ছিল। ভোর ৩টা ২০, এরপর সকাল ৭টা ৫, সাড়ে ১০টা, দুপুর ২টা ২০ মিনিট এবং রাত ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটগুলো ঢাকা থেকে জেদ্দার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। কিন্তু ২টা ২০ মিনিটের ফ্লাইটে ১৪০ জন যাত্রী যেতে না পারায় প্রথম দিন এক হাজার ৯৫৫ জন জেদ্দা গেছেন।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন