লাইলাতুল কদর অনির্দিষ্ট থাকলেও হাদিসের মধ্যে এর কিছু আলামত বর্ণিত হয়েছে, যা দ্বারা লাইলাতুল কদর চেনা যায়।
এক. যে রাতে লাইলাতুল কদর হবে আসমান স্বচ্ছ থাকবে। বাতাস স্বাভাবিক থাকবে। নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশ থাকবে। সকালবেলা সূর্যের উদয় হবে, তার কিরণ নিষ্প্রভ থাকবে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সারা বছর রাত জেগে নামাজ আদায় করবে সে কদরের রাত প্রাপ্ত হবে। এ কথা শুনে উবাই ইবনে কাব বললেন, যিনি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই সে মহান আল্লাহর কসম! নিশ্চিতভাবে লাইলাতুল কদর রমজান মাসে। এ কথা বলতে তিনি কসম করলেন কিন্তু ইন-শা-আল্লাহ বললেন না (অর্থাৎ তিনি নিশ্চিতভাবেই বুঝলেন যে রমজান মাসের মধ্যেই ‘লাইলাতুল কদর’ আছে)। এরপর তিনি (সা.) আবার বললেন, আল্লাহর কসম! কোন রাতটি কদরের রাত তা-ও আমি জানি। সেটি হলো এ রাত, যে রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের নামাজ আদায় করতে আদেশ করেছেন। ২৭ রমজান সকালের আগের রাতটিই সে রাত। আর ওই রাতের আলামত বা লক্ষণ হলো, সে রাত শেষে সকালে সূর্য উদিত হবে তা উজ্জ্বল হবে, কিন্তু সে সময় (উদয়ের সময়) তার কোনো তীব্র আলোকরশ্মি থাকবে না (অর্থাৎ দিনের তুলনায় কিছুটা নিষ্প্রভ হবে)। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৬৭০)
চার. কদরের রজনিতে কখনো কখনো বৃষ্টিও হতে পারে। একটি দীর্ঘ হাদিস থেকে এমনটি বোঝা যায়। আবু সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী (সা.)-এর সঙ্গে রমজানের মধ্যম দশকে ইতিকাফ করি। তিনি বিশ তারিখের সকালে বের হয়ে আমাদেরকে সম্বোধন করে বললেন, আমাকে লাইলাতুল কদর (এর সঠিক তারিখ) দেখানো হয়েছিল পরে আমাকে তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তোমরা শেষ দশকের বিজোড় রাতে তার সন্ধান করো। আমি দেখতে পেয়েছি যে আমি (ওই রাতে) কাদা-পানিতে সিজদা করছি। অতএব, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ইতিকাফ করেছে সে যেন ফিরে আসে (মসজিদ থেকে বের হয়ে না যায়)। আমরা সবাই ফিরে আসলাম (থেকে গেলাম)। আমরা আকাশে হালকা মেঘখণ্ডও দেখতে পাইনি। পরে মেঘ দেখা দিল ও এমন জোরে বৃষ্টি হলো যে খেজুরের শাখায় তৈরি মসজিদের ছাদ দিয়ে পানি ঝরতে লাগল। সালাত শুরু করা হলে আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে কাদা-পানিতে সিজদা করতে দেখলাম। পরে তাঁর কপালে আমি কাদার চিহ্ন দেখতে পাই। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০১৬)