শুভেচ্ছা জানাতে বাংলা ভাষায় একটি নতুন শব্দের সংযোজন করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেচ্ছার শুভ এবং অভিনন্দনের নন্দন মিলিয়ে বাংলা ভাষায় নতুন শব্দ -‘শুভনন্দন’ সংযোজন করলেন তিনি। মূলত শুভেচ্ছা জানাতে এই শব্দটি গতকাল বুধবার ব্যবহার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ভাষাবিদরা এটিকে ‘জোরকলম’ শব্দ হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন। গতকাল বুধবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সফরের তৃতীয় দিনে দিঘায় স্থানীয় প্রেস ক্লাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন মমতা। সেখানে সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে ‘শুভনন্দন’ শব্দটি ব্যবহার করেন তিনি।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার পুরো দিঘা ‘শুভনন্দন’ পোস্টারে ছেয়ে গেছে। ইতোমধ্যেই এ শব্দের ব্যবহার শুরু হয়েছে।
গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর মুখে নতুন শব্দ শুনে অনুষ্ঠানে হাজির অনেকেই কৌতূহল প্রকাশ করেন। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মমতা বলেন, ‘নতুন নতুন শব্দের সৃষ্টি করতে হবে। অনেকে বলে শুভেচ্ছা। আমি বলি, শুভনন্দন। অর্থাৎ শুভেচ্ছা দিয়ে শুভ থাকুন। ভালো থাকুন।’
ভাষাবিদ পবিত্র সরকারের মতে, ‘একে বলে জোরকলম ভাষা। শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দনের আগে এবং পরের শব্দগুলো নিয়ে শুভনন্দন শব্দটি তিনি তৈরি করেছেন। সত্যজিৎ রায় ধরণী, নবান্ন, উপান্ন, শুভান্নর চেয়ে শুভনন্দন অনেক বেশি অর্থবহ।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক রাজ্যেশ্বর সিনহা বলেন, ‘বহুদিন ধরেই জোরকলম বা হাইব্রিড শব্দের চল সব ভাষায়ই আছে। শুভনন্দনের কোনো ব্যবহার অতীতে দেখিনি। এই শব্দের ব্যবহারই পরবর্তীকালে এর জনপ্রিয়তা প্রমাণ করবে।’
এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আপনাদের সবাইকে নব বৈশাখের শুভনন্দন জানাই। সবাই বলেন, শুভেচ্ছা বা অভিনন্দন। কিন্তু বাংলায় নতুন শব্দ তো আনতে হবে। তাই শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন মিলিয়ে শুভনন্দন হবে না কেন? আমি তাই এটা বললাম আজ।’
রাজনীতির পাশাপাশি নানা বিষয়ে যে চর্চা করেন মমতা তা সবার জানা। পশ্চিমবঙ্গের বহু সামাজিক প্রকল্পের সুন্দর নাম তাঁরই দেওয়া। ‘কন্যাশ্রী’, ‘রূপশ্রী’, ‘চোখের আলো’র মতো প্রকল্পের পাশাপাশি ‘ভোরের আলো’, ‘উত্তীর্ণ’, ‘উত্তরকন্যা’র মতো পর্যটনক্ষেত্র কিংবা সচিবালয়ের নামও তার দেওয়া।
এ ছাড়া নানাজনের নামকরণের বিষয়টিও তার সারাক্ষণের নজরে আছে। ভাষা চর্চাতেও তিনি অনেকের চেয়ে এগিয়ে। এবার বাংলা অভিধানে নতুন শব্দ সংযোজনেও এগিয়ে এলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।