আবার এসেছে ফেব্রুয়ারি। আজ বুধবার থেকে ফের বাজবে একুশের গান। আবৃত্তি হবে রক্তের গৌরবে লেখা ভাষাশহীদদের স্মরণে কবিতা। ভাষার অধিকারের সমতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রেরণা পাবে বিশ্ব।
একাত্তর বছর আগে ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’—পাকিস্তান সরকারের এমন ঘোষণায় পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পূর্ব বাংলার মানুষ অন্যায় এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি। তাই বাংলা ভাষার সমমর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে।
ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখ আমাদের ভাষাশহীদ দিবস। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। পৃথিবীর সব জাতিগোষ্ঠীর মানুষের মাতৃভাষার অধিকার ও মর্যাদার স্বীকৃতি স্মরণ করিয়ে দেওয়ার এই দিন বাঙালির জন্য বিশেষভাবে আবেগময়। মাতৃভাষার জন্য বুকের রক্ত দেওয়ার নজির পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। ভাষার জন্য বাংলার সন্তানদের এই বিরল আত্মত্যাগ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর। এদিন ইউনেসকো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে। এর মধ্য দিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে এখন বিশ্বের দেশে দেশে পালন করা হয়। শুধু বাংলা নয়, বাংলাদেশ ও বহির্বিশ্বে আরো যেসব ভাষার মানুষ আছে, তাদেরও নিজ নিজ মাতৃভাষার বিকাশের উদ্যোগ বেগবান করার তাগিদ দেয় এই দিবস।
গত দুই বছর বাংলাদেশসহ বিশ্বকে গ্রাস করেছিল করোনা মহামারি। ফলে ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতায় স্বাভাবিক ছন্দঃপতন হয়। বহু বছরের ঐতিহ্যে পরিণত হওয়া বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলা যথাসময়ে শুরু হয়নি, ছিল নানা বিধি-নিষেধ আর আড়ষ্টতা। পুরোপুরি বন্ধ ছিল জাতীয় কবিতা উৎসব। শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের কর্মসূচি ছিল নিয়ন্ত্রিত। এবার ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিন থেকেই শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা। আজ বিকেল ৩টায় অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই বছর পর আবার ‘বাংলার স্বাধীনতা আমার কবিতা’ স্লোগানে ফিরছে জাতীয় কবিতা উৎসব। সকাল ১০টায় ৩৫তম জাতীয় কবিতা উৎসব উদ্বোধন করবেন কবি আসাদ চৌধুরী।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন