Friday , 22 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
টেকনাফে রোহিঙ্গাদের বর্জ্য মিশ্রিত পানি দিয়ে লবণ তৈরি! 

টেকনাফে রোহিঙ্গাদের বর্জ্য মিশ্রিত পানি দিয়ে লবণ তৈরি! 

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গাদের বর্জ্য মিশ্রিত পানি দিয়ে তৈরি হচ্ছে লবণ। ফলে লবণের গুণগত মান যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি ওই লবণ খেয়ে সৃষ্টি হতে পারে মানবদেহে কঠিন ও জটিল রোগ।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়,  টেকনাফের ৪টি ক্যাম্পের বসবাসরত ২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের দ্বারা প্রবাহিত  বর্জ্য মিশ্রিত পানি দিয়ে লবণ চাষিরা  উৎপাদন  করছে লবণ। উৎপাদিত  লবণ তৈরির বীজতলায় পলিথিনের উপর যে পানি রেখেছে সে পানি থেকে  বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।এসব বর্জ্য মিশ্রিত পানি  রোদে শুকিয়ে লবণে পরিণত করা হচ্ছে । যার কারণে ওই লবণের আসল রং নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ওই এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছ।  এমতাবস্থায় এসব এলাকা থেকে যে সমস্ত উৎপাদিত লবণ দেশের বিভিন্ন কলকারখানায় যাচ্ছে,সে সব লবণ বিভিন্ন  অঞ্চলের লবণের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে।এ বিষয়ে টেকনাফ বিসিক লবণ শিল্প দপ্তরের কোনো মাথাব্যথা না থাকলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, স্থানীয় লবণ চাষি ও লবণ ব্যবসায়ী ।এ বিষয়ে হ্নীলা ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোহাম্মদ আলী জানান,রোহিঙ্গাদের দৈনন্দিন টয়লেটের, রান্নাবান্নার, গোসলখানা ও অনেকের টয়লেট পরিষ্কারের পানি ড্রেনে ফেলে দেয়। যার ফলে ওই ড্রেনের মুখ বিভিন্ন খালের মাথায় সংযুক্ত থাকায় সব ময়লা-আবর্জনাযুক্ত পানি খালে চলে যায়।এ ব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, বর্জ্য নিষ্কাশনে কয়েকটি এনজিও সংস্থা কিছুটা কাজ করলেও সিংহভাগ বর্জ্য মিশ্রিত পানি অনেক ছোট-বড় খাল দিয়ে সরাসরি নাফ নদীতে চলে যায়। যার ফলে ওই ছোট ছোট খাল থেকে লবণ উৎপাদনের জন্য যে পানি উত্তোলন বা ব্যবহার হয় তা রোহিঙ্গাদের বর্জ্য মিশ্রিত পানি ।শুধু তা নয়, হ্নীলা ইউপির আলীখালী, লেদা, আবুবক্করের রাস্তার মাথা, জাদিমুড়া খালসহ অনেক এলাকার খালে বাঁধ নির্মাণ করে রোহিঙ্গাদের বর্জ্য মিশ্রিত পানি আটকে রেখেছে লবণ চাষিরা। যাতে নাফ নদী থেকে জোয়ারে আসা পানি রোহিঙ্গাদের বর্জ্য মিশ্রিত পানির সঙ্গে মিশতে না পারে। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা কামনা করেছেন লবণ চাষিরা।লেদা ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার জাফর আলম  জানান, রোহিঙ্গাদের বর্জ্য মিশ্রিত পানির কারণে ২ হাজার কানি লবণের মাঠ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তবে পুকুর তৈরি করে ওই পানি লবণ উৎপাদনের পানির সঙ্গে যাতে মিশ্রিত না হয় সে ব্যবস্থা করতে কয়েকটি এনজিও সংস্থা লবণ চাষিদের সঙ্গে আলোচনা সভা করেও  কথা দিয়ে কথা রাখেনি। আমরা এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে চাই। না হলে আমাদের টেকনাফের লবণ শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়বে।এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার এনামুল হক জানান, রোহিঙ্গাদের বর্জ্য মিশ্রিত পানি দিয়ে যে লবণ উৎপাদন হবে,  সেগুলো সেবনে মানবদেহে ফুসফুসের শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, চর্ম রোগ, এমনকি ক্যানসারও হতে পারে।টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এরফানুল হক চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গাদের বর্জ্য মিশ্রিত পানির কারণে লবণ শিল্পে ক্ষতি হোক আমরা চাই না। তবে কেউ যদি আমাদের কাছে আবেদন করেন তা অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply