অনলাইন ডেস্ক:
উত্তর ইরানে এক ব্যক্তিকে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি করে হত্যা করেছে বলে জানা গেছে। ইরানের জাতীয় ফুটবল দল চলমান কাতার বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়। এ কারণে দেশটির সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা প্রকাশ্যে আনন্দ উদযাপন করলে ওই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়।
নিহত ওই যুবকের নাম মেহেরান সমক, বয়স ২৭।
কর্মীরা জানান, মেহেরান পরাজয় উদযাপনে নিজের গাড়ির হর্ন বাজানোর পরেই তাঁর মাথায় সরাসরি গুলি করা হয়। বুধবার রাতে বন্দর আনজালি শহরে এ ঘটনা ঘটে।
অন্যান্য শহরের ভিডিওগুলোতেও দেখা যায়, ইরানের ফুটবল দলের পরাজয়ে ইরানি জনতা উল্লাস এবং রাস্তায় নাচ করছে। ইরানের বহু মানুষ কাতারে বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া তাদের ফুটবল দলকে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে মনে করে সমর্থন দিতে অস্বীকার করেছিল। তাই হেরে যাওয়ার কারণে তারা উল্লাসে ফেটে পড়ে।
গ্রুপ পর্বের সর্বশেষ খেলায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ১-০ ব্যবধানে পরাজিত হয় তারা। এর পরেই দেশটির রাষ্ট্রীয় সুবিধাপ্রাপ্ত মিডিয়া খেলোয়াড়দের ওপর অন্যায্য চাপ সৃষ্টির জন্য ইরানের অভ্যন্তরীণ এবং বাইরের শত্রুশক্তিকে দায়ী করেছে।
কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর থেকেই ইরানে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা এখন পৌঁছে যায় ফুটবল বিশ্বকাপের মঞ্চেও। গত মঙ্গলবার বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ায় আনন্দে মেতেছিল ইরানিদের একাংশ। তারা জানায়, এই হার ফুটবল দলের নয়, বরং সরকারের। সেই কারণেই আনন্দে মেতেছেন তারা।
মেহরান সমকের মাথায় গুলি করে হত্যার বিষয়ে ইরান সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। এ ছাড়া ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের হত্যার বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে।
হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের পুলিশ ২২ বছর বয়সী কুর্দি ইরানি তরুণী মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় কোমায় চলে যায় এই তরুণী। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিনই মারা যায় মাহসা আমিনি। তার মৃত্যুর পর থেকেই ইরানজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে।
ইরানের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, ওই তরুণী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে ভুক্তভোগীর পরিবারের দাবি, তাকে পুলিশ মারধর করেছে। নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার গ্রুপ ইরান হিউম্যান রাইটস বলেছে, ইরানে এই বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে কমপক্ষে ৪৪৮ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৬০ জন শিশু।
সূত্র : বিবিসি