সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
সাফ বিজয়ী নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক ও স্ট্রাইকার সাবিনা খাতুন ও তার
পরিবারের সদস্যদেরকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া
হয়েছে। শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সংবর্ধনায় সাবিনা খাতুনের মাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও স্থানীয় কোচ
প্রয়াত আকবার আলীর স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
সাফ জয়ের পর নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন তার নিজ জেলা
সাতক্ষীরায় এসেছেন শুক্রবার ভোর রাতে। ওই দিন বেলা এগারটায় সার্কিট হাউজ
মোড় থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা দেয় বিভিন্ন সংগঠন। শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের
পক্ষ থেকে তাকে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সংবর্ধনা পেয়ে খুশি এই কৃতি ফুটবলার। তিনি জেলা প্রশাসনের কাছে মেয়েদের
খেলার উপযোগী একটি মাঠ ও বোনের জন্য চাকরি দাবি করেছেন।
সাবিনা খাতুনকে সংবর্ধনা দিতে পেরে আনন্দিত জেলা প্রশাসন। সাতক্ষীরায়
নারী খেলোয়াড়দের এগিয়ে নিতে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক
মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। তিনি সাবিনা খাতুনকে ১লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন।
এছাড়া সংবর্ধনায় উপস্থিত সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক
আহমেদ রবি সাবিনা খাতুনকে ৩ লাখ টাকার সৌজন্য উপহার ঘোষণা দিয়েছেন।
সংবর্ধনার জবাবে সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেন,
সাতক্ষীরাসহ বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমি মুগ্ধ। আমার বেড়ে
উঠা এই সাতক্ষীরার মাটিতেই। এ মাটিতেই আমার শৈশব মিশে আছে। আমি যখন ফুটবল
খেলা শুরু করি, তখন আমার স্বপ্ন ছিল সাউথ এশিয়ান কাপ বাংলাদেশকে উপহার
দেবো। আমি সেটা দিতে পেরেছি। এটা আমার সার্থকতা। আমার পরিশ্রমের
সার্থকতা। আমার শিক্ষক আকবর স্যার আজ নেই। উনার কথা অবশ্যই স্মরণ করতে
হয়। আমি তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। আমার সাবিনা হয়ে ওঠার পেছনে যার অবদান
সবচেয়ে বেশি, তিনি হলেন আমার আকবর স্যার। সাথে সাথে আমাকে যারা সাপোর্ট
দিয়েছে তাদের সবার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।
ফুটবল খেলাটা মেয়েদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশে বড় লোকের ঘরের
মেয়েরা ফুটবল খেলে না। গরিব নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়েরা ফুটবল
খেলে। কিন্তু খেলার সামগ্রী কেনার সামর্থ্য তাদের থাকে না। এই খেলা ধরে
রাখতে বৃত্তবান মানুষের অংশগ্রহণ একান্ত জরুরী। সাতক্ষীরায় ফুটবল একাডেমি
প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সাতক্ষীরায় মেয়েদের জন্য মাঠের সংকট। জেলায় একটি
স্টেডিয়াম আছে। কিন্তু সেখানেও সব সময় খেলার সুযোগ থাকে না। সাতক্ষীরা
সরকারি কলেজ মাঠ ও পিটিআই মাঠ মেয়েদের খেলার জন্য উপযোগী নয়। এজন্য
সাতক্ষীরায় মেয়েদের খেলার উপযোগী নির্দিষ্ট মাঠ প্রয়োজন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আকবর স্যার যখন আমাদের প্রাকটিস করাতেন তখন
একশ্রেণির মানুষ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতো। তখন আমার বয়স ১২-১৩ বছর। সেই
প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে তিনি আমাদের গড়ে তুলেছেন।
সাতক্ষীরার অনুন্নত রাস্তাঘাট ও জলাবদ্ধতা বড় সমস্যা। এ সমস্যা সমাধান
করা জরুরি। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।