Friday , 22 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানা থেকে ৪ কোটি টাকা মূল্যের গার্মেন্টস মালামালসহ ৪ জনকে আটক করেছে র‍্যাব

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানা থেকে ৪ কোটি টাকা মূল্যের গার্মেন্টস মালামালসহ ৪ জনকে আটক করেছে র‍্যাব

স্টাফ রিপোর্টার:

কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ থানা এলাকা হতে প্রায় ৪ কোটি টাকা মূল্যের
রপ্তানিযোগ্য চোরাই গার্মেন্টস মালামালসহ সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা চোরচক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪। বিপুল পরিমাণ কিটস পোশাক সামগ্রী, ০১টি কাভার্ড ভ্যান জব্দ।
১। র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও সফলতার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী
বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র‌্যাবের জোরালো তৎপরতা অব্যাহত আছে।
২। গত ১৪ আগস্ট ২০২১ ঢাকা জেলার আশুলিয়া ও গাজীপুর থেকে গার্মেন্টস মালামাল বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের নেওয়ার পথে কিছু কিছু কাভার্ড ভ্যান হতে প্রায় ৩০%-৪০% দামী গার্মেন্টস মালামাল উধাও হবার ছায়া তদন্তের এক পর্যায়ে ফ্যাক্টরী থেকে মালামাল নেওয়ার সময় পথিমধ্যে নারায়নগঞ্জ জেলার বন্দর থানার একটি পরিত্যাক্ত রি-রোলিং মিলস এ কাভার্ড ভ্যান থামিয়ে র‍্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল আন্তঃজেলা চোর চক্রের মূলহোতা মোঃ সিরাজুলসহ ০৬ জনকে আনুমানিক ০৬ কোটি টাকা মূল্যের চোরাইকৃত ৪১ বস্তা ও ৫০৬ কার্টুন ভর্তি গার্মেন্টস সামগ্রীসহ কাভার্ড ভ্যান জব্দ ও গ্রেফতার করতে
সমর্থ হয়। কিন্তু পরবর্তীতে মূলহোতা সিরাজুল গত তিন মাস পূর্বে হাজত থেকে জামিনে বের হয়ে আবারও পূর্বের ন্যায় একই কার্যক্রম শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ রাতে র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার সদর
দক্ষিন থানাধীন বেলতলী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আনুমানিক ০৪ কোটি টাকা মূল্যের চোরাইকৃত প্রায় ৪৫৭ কার্টুন ভর্তি গার্মেন্টস সামগ্রী একটি কাভার্ড ভ্যানসহ সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা চোরচক্রের ০৪ সদস্য’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং ঘটনাস্থল হতে চালকসহ ৩/৪ জন আসামী পালিয়ে যায়। ইতোমধ্যে উদ্ধারকৃত গার্মেন্টস মালামালসমূহ
সংশ্লিষ্ট পোশাক প্রস্তুতকারী সংস্থার কর্তৃপক্ষ তাদের বলে শনাক্ত করেছে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলোঃ
(ক) মোঃ হিমেল @ দুলাল (৩৮), জেলা-ভোলা।
(খ) আবুল কালাম (৪০), জেলা-ভোলা।
(গ) মোঃ মহসিন আলী @ বাবু (৩১), জেলা- কুমিল্লা।
(ঘ) মোঃ আলামিন (৩০), জেলা-বগুড়া।
৩। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর মিরপুর, উত্তরা, আশুলিয়া ও গাজীপুর থেকে বিভিন্ন দেশে রপ্তানীযোগ্য গার্মেন্টস মালামাল চুরির ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তি প্রদান করে। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে,
তারা মালামাল পরিবহনে নিয়োজিত চালকদের সাথে সংঘবদ্ধ হয়ে একটি দুর্ধর্ষ চোরাকারবারী চক্র গঠন করে পরস্পর যোগসাজোশে বিগত কয়েক বছর ধরে গার্মেন্টস মালামাল কাভার্ড ভ্যান হতে বিশেষ প্রক্রিয়ায় চুরি করে স্থানীয় মার্কেটে চোরাইপথে কমদামে বিক্রি করে আসছিলো। এতে করে দেশ প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি গার্মেন্টস
মালিকগণ প্রতিনিয়ত বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে আসছিলেন। প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এ ধরনের কয়েকটি চক্র ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সক্রিয় রয়েছে এবং প্রতি বছর শতকোটি টাকা মূল্যের বেশী পোশাক এসব চক্রের মাধ্যমে চুরি হয়ে যাচ্ছে।
৪। চুরির কৌশলঃ এই চোরচক্রটি সাধারণত কাভার্ড ভ্যানের ড্রাইভারের সাথে সখ্যতা তৈরির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার লোভ দেখানো ও চুরির মালামাল বিক্রয়ের টাকার অংশ দেওয়ার কথা বলে ড্রাইভারকে রাজি করিয়ে নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর এলাকা হতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের
নিকটবর্তী নির্জন এলাকার ভিতর কাভার্ড ভ্যান পার্কিং করাতো। পরবর্তীতে পলাতক মূলহোতা মোঃ সিরাজুল এর নির্দেশে গ্রেফতারকৃত আসামী হিমেল, আবুল কালাম, মহসিন ও আলামিন এবং পলাতক সহযোগী নুর জামানসহ অন্যান্য অজ্ঞাতনামা সহযোগীরা মিলে বিশেষ কৌশলে কাভার্ড ভ্যানের সিলগালা তালা না খুলে কাভার্ড ভ্যানের পাশের ওয়ালের নাট-বল্টু খুলে প্রত্যেক কার্টুনের ভিতরে থাকা মালামালের ৩০%-৪০% মালামাল নিয়ে পূর্বের ন্যায় কার্টুন সঠিকভাবে বাধাই করে তাদের কাভার্ড ভ্যানে নিয়ে যেতো যাতে করে ফ্যাক্টরী মালিক ও বন্দর কর্তৃপক্ষ কেউই সন্দেহ না করতে পারে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, এই চোরচক্রটি কার্টুনের
মালামালের ওয়েট ঠিক রাখার জন্য যে পরিমানের মালামাল কার্টুন থেকে চুরি করে সরিয়ে রাখে, ঠিক সে পরিমাণ ঝুট কার্টুনের ভিতর মালামালের মাঝখানে দিয়ে কার্টুন প্যাকেট করে। যার ফলে বন্দরে স্ক্যানিং কিংবা ওয়েট মেশিনে কোন ধরণের অনিয়ম পরিলক্ষিত হয় না। এছাড়াও
মালামালসহ সম্পূর্ণ ট্রাক/কাভার্ড ভ্যানও মাঝে মাঝে তারা লুট করেছে বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply