Wednesday , 27 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আবারও গ্রেফতার শাল্লার ঝুমন দাস
--প্রেরিত ছবি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আবারও গ্রেফতার শাল্লার ঝুমন দাস

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
 সুনামগঞ্জ শাল্লার সেই ঝুমন দাসকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আবারও  গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম  ফেসবুকে আবারও  উসকানিমূলক পোস্ট শেয়ার দেয়ার অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাকে হেফাজতে নেয় শাল্লা থানা পুলিশ।
 প্রায় ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় ঝুমন দাস কে। বিষয়টি নিশ্চিত করে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমনুর রহমান মামলাটি করেন।
ঝুমনের ভাই নূপুর দাস বলেন, সাম্প্রদায়িক উসকানি দেয়ার অভিযোগে পুলিশ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় তাকে থানায় নিয়ে যায়। এর আগে দুই দিন ধরে তাকে ফলো করছিল পুলিশ। তার মোবাইল পুলিশ নিয়ে গেছে এবং কিছু পোস্ট রিমুভ করে দিয়েছে। সন্ধ্যায় ঝুমনের স্ত্রী থানায় গেলে তাকে জানানো হয় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ঝুমনকে ছেড়ে দেয়া হবে। কিন্তু মধ্যরাতে তাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ঝুমনের ফেসবুকে শেয়ার করা ছবির বিষয়ে তিনি বলেন, মন্দিরের ভেতরে মসজিদের দানবাক্স সংক্রান্ত ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবি নিজের আইডি থেকে শেয়ার করেছিলেন ঝুমন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। এর আগে গত বছরের ২০২১ সালের ১৫ মার্চ দিরাইয়ে শানে রিসালাত সম্মেলন নামে একটি সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম। এতে হেফাজতের তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক এতে বক্তব্য দেন। এই সমাবেশের পরদিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের ঝুমন দাস। স্ট্যাটাসে তিনি মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি  নষ্টের অভিযোগ আনেন। মামুনুলের সমালোচনাকে ইসলামের সমালোচনা বলে এলাকায় প্রচার চালাতে থাকেন তার অনুসারীরা। এতে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা ১৬ মার্চ রাতে ঝুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরদিন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর সকালে কয়েক হাজার লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করে হামলা চালায় নোয়াগাঁও গ্রামে। তারা ভাঙচুর ও লুটপাট করে ঝুমন দাসের বাড়িসহ হাওরপাড়ের হিন্দু গ্রামটির প্রায় ২০/৩০টি বাড়ি, মন্দির। ঝুমনের স্ত্রী সুইটিকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এরপর ২২ মার্চ ঝুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল করিম। শাল্লায় হামলার ঘটনায় শাল্লা থানার এসআই আব্দুল করিম, স্থানীয় হাবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল ও ঝুমন দাসের মা নিভা রানী তিনটি মামলা করেন। তিন মামলায় প্রায় ৩ হাজার আসামি করা হয়। পুলিশ নানা সময়ে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। তারা সবাই এখন জামিনে। শুধু জামিন পাচ্ছিলেন না ঝুমন দাস। বিচারিক আদালতে পাঁচ দফা তার জামিন আবেদন নাকচ করেন বিচারক। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন অধিকারকর্মী, বুদ্ধিজীবী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা চলছিল। এর মধ্যে জামিনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন ঝুমন দাস। কারাবন্দির ছয় মাস পর শর্তসাপেক্ষে জামিনে মুক্তি পান তিনি।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply