অনলাইন ডেস্ক:
বিএনপির মুখে অর্থপাচার নিয়ে কথা মানায় না উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও তার ভাই অর্থপাচারের দায়ে আদালতে দণ্ডিত, যাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কালো টাকা সাদা করেছেন, যাদের আমলে দেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়, তাদের মুখে এ ধরনের কথা মানায় না।
পি কে হালদার ধরা পড়ার পর বিএনপি নেতারা অর্থপাচার নিয়ে নানা কথা বলছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের অর্থপাচারের বিষয়ে এফবিআই এসে সাক্ষ্য দেয়, তার ভাইয়ের অর্থপাচার সিঙ্গাপুরে উদঘাটিত হয় এবং সেই অর্থ ফেরত আনা হয় ও দুর্নীতির কারণে তারা তো বিশ্বচোর ছাড়া কিছু নয়। বয়সে আমার জ্যেষ্ঠ ফখরুল সাহেবের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই আমি অপ্রিয় হলেও সত্য একটি কথা বলতে চাই, তিনি সেই বিশ্বচোরের মুখপাত্র। ’
আজ সোমবার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মিলনায়তনে ‘ঐতিহাসিক ১৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন : মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রে উত্তোলন এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যারা এ ধরনের অর্থ পাচার করেছে আমরা সেগুলো উদঘাটন করছি। তাদের আইনের আওতায় এনেছি এবং সে কারণেই পি কে হালদার ধরা পড়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং তার ভাই ছাড়াও আরো কারা অর্থ পাচার করেছে আমাদের জানা আছে। আস্তে আস্তে সেগুলোও আপনারা জানতে পারবেন। আমরা সেগুলো উদঘাটন করছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা সেগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন এবং এটি অব্যাহত থাকবে। ’
সরকারকে শ্রীলঙ্কার উদাহরণ দেওয়াকে বিএনপির অনর্থক অপপ্রচার বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার উদাহরণ বাংলাদেশকে দিয়ে লাভ নেই। যে দেশ নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করে, যে দেশ শ্রীলঙ্কাকে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেয় এবং ফেরত দিতে পারছে না বিধায় ঋণ পরিশোধের সময়সীমা আমরা বাড়িয়ে দিয়েছি। সেই দেশ সেই সরকারকে এই উদাহরণ দেওয়া অনর্থক এবং অপপ্রচার। ’
মন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলনের কথা বলে বিএনপি সারা দেশে সমাবেশের নামে নিজেরাই মারামারি করছে। আমরা এখনো মাঠে নামিনি, যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হয়, আমরা মাঠে নামব। যারা উঁচু গলায় বক্তৃতা করেন, কী হলে, কী করলে তারা গর্তে লুকাবেন সেটা আমরা ভালোভাবেই জানি। ’
এর আগে বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘১৯৮১ সালের ১৭ মে প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল না, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা, যার ধমনিতে শিরায় শিরায় বঙ্গবন্ধুর রক্তের ধারা প্রবহমান, যার কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠ প্রতিধ্বনি হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্রের অগ্নিবীণা, অন্যায়-অনাচারের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন হয়েছিল। ’
তিনি বলেন, ‘গত ৪১ বছরে পথ চলায় সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে উপড়ে ফেলে জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের পাশে থেকেছেন এবং আছেন। তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র বাক্সবন্দি থেকে মুক্ত হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি এসেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্নের বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে। ’
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে এবং বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় শেখ হাসিনার ৪১তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভায় আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. আব্দুস সামাদ, সামাজিক বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, বিশিষ্ট কলাম লেখক সুভাষ সিংহ রায়।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন