অনলাইন ডেস্ক:
আজ রমজানের শেষ জুমা। অনেক অঞ্চলে রমজানের শেষ জুমাকে ‘জুমাতুল বিদা’ বা শরিয়ত নির্দেশিত ফজিলতপূর্ণ দিবস-রজনীর অন্তর্ভুক্ত মনে করে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এমনকি শেষ জুমার ফজিলত পাওয়ার আশায় দলে দলে এলাকার বড় বড় মসজিদে গমন করে থাকেন। তা ছাড়া এ জুমায় মুসল্লির সমাগমও বেশি হয়ে থাকে।
অথচ ‘জুমাতুল বিদা’ নামে ইসলামী শরিয়তে পৃথক কোনো দিবস নেই; বরং এটি একটি নতুন আবিষ্কৃত পরিভাষা। কোরআন-হাদিসের কোথাও তা পাওয়া যায় না।
আবার অনেক অঞ্চলে এ দিনকে কেন্দ্র করে বিশেষ নামাজের ফজিলতের কথা বলা হয়ে থাকে। যেমন, ‘যে ব্যক্তি ‘জুমাতুল বিদা’য় বিশেষ পদ্ধতিতে চার রাকাত নামাজ আদায় করবে তার সারা জীবনের কাজা নামাজের কাফফারা হয়ে যাবে। ’
ইমাম শাওকানি (রহ.)-এর জাল হাদিস বিষয়ক রচনা ‘আলফাওয়াইদুল মাজমুআতে’ রমজানের শেষ জুমার নামাজ বিষয়ে আরো একটি জাল বর্ণনার উল্লেখ রয়েছে, ‘রমজানের শেষ জুমায় যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে আদায় করবে তার সারা বছরের ছুটে যাওয়া নামাজের কাজা আদায় হয়ে যাবে। ’ এই নসটি উল্লেখ করার পর ইমাম শাওকানি (রাহ.) বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি একটি জাল বর্ণনা। ’ (আলফাওয়াইদুল মাজমুআতে, বর্ণনা:১১৫)
তবে হাদিসের ভাষায়, জুমার দিন সপ্তাহের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাপূর্ণ একটি দিন। এই দিনের ফজিলত সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য হাদিসগ্রন্থগুলোতে একাধিক বর্ণনা রয়েছে। বিখ্যাত সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনে তাঁকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। (মুসলিম, হাদিস : ৮৫৪)
তাই বছরের সব জুমার দিনই ফজিলতের দিক দিয়ে সমান। কমবেশির কথা কোরআন-হাদিসে উল্লেখ নেই। আর রমজানের যেকোনো শুক্রবারই রমজান মাসের কারণে এর বিশেষ গুরুত্ব রাখে। তবে রমজানের প্রথম জুমার তুলনায় শেষ জুমার ফজিলত বেশি, এ ধারণা অমূলক, ভিত্তিহীন।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন