Saturday , 23 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির কোনো সংঘাত নেই : প্রধানমন্ত্রী
--ফাইল ছবি

ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির কোনো সংঘাত নেই : প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক:

ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির কোনো সংঘাত বা বিরোধ নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কিছু লোক ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির বিরোধ সৃষ্টি করতে চায়। এটা মোটেও সঠিক নয়। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরা একসঙ্গে উৎসব পালন করে থাকি। ’

আজ বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকালে আট জেলায় নবনির্মিত শিল্পকলা একাডেমি ভবনের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। কুষ্টিয়া, খুলনা, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও রংপুর জেলার নবনির্মিত শিল্পকলা একডেমিগুলোও ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিল।

বক্তৃতার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত সব বাংলাদেশিদের পবিত্র মাহে রমজান, আগামীকালের বাংলা নববর্ষ এবং আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগাম শুভেচ্ছা জানান।

বাংলা ১৪০০ সালে বাঙালির বর্ষবরণ পহেলা বৈশাখ উদযাপনে বারবার বাধা দেওয়া এবং রমনা রটমূলে বোমা হামলার প্রসঙ্গ স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো করাই হয়েছিল যাতে করে আমাদের সংস্কৃতিচর্চা বন্ধ হয়ে যায়। আজ আমরা পহেলা বৈশাখ উদযাপন করি। এই একটা উৎসব ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকলে এক হয়ে একসঙ্গে উদযাপন করে। যেখানে সকলের একটা চমৎকার মিলনমেলা হয়। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের যেখানেই বাংলাদেশিরা আছে তারাই এই উৎসব পালন করে যাচ্ছে। ‘

তিনি করোনার জন্য সতর্কতার সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপনের আহ্বান জানান।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের এই ঐতিহ্য আমাদেরকেই ধারণ করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন এটা চর্চা করতে পারে, বিকশিত করতে পারে এবং আধুনিক প্রযুক্তির সম্মিলন ঘটিয়ে যেন এটার আরো উৎকর্ষ সাধন করতে পারে সেদিকে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। সেটা আমরা দেব। ’

প্রধানমন্ত্রী ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সব ধর্মাবলম্বীর সহাবস্থানের কথা উল্লেখ করে বলেন, কেবল সব ধর্মের মানুষের ধর্মচর্চা নয়, দেশের যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে তাদেরও সংস্কৃতিচর্চা বিকাশের ব্যবস্থা সরকার নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ‘আমরা বাঙালি আমাদের নিজস্ব স্বকীয়তা এবং যে সংস্কৃতি রয়েছে সেটা যেন আরো উজ্জীবিত এবং বিকশিত  হয় সেভাবেই কাজ করতে হবে। ‘

আমাদের দেশের মানুষরা সাধারণত সংস্কৃিতমনা উল্লেখ করে তিনি উদাহারণ দিয়ে বলেন, ‘আমাদের দেশে নৌকার মাঝিও নৌকা চালাতে চালাতে গান ধরে, একসময় গরুর গাড়ির প্রচলন ছিল এবং সে সময় মরমি শিল্পী আব্বাসউদ্দীনের ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’ গানের সুর আজও হৃদয় ছুঁয়ে যায়। আধুনিক যুগে সেসব হারিয়ে যেতে বসেছে। তবুও সেগুলো শিল্পীর শিল্পে উজ্জীবিত হয়ে রয়েছে। কাজেই আমাদের এই সাংস্কৃতিক চর্চাগুলো অব্যাহত রাখতে হবে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ঐতিহ্য যেমন আমরা ভুলব না আবার যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়েও চলতে হবে। আধুনিক যুগের যে সংস্কৃতি তার সঙ্গে যেন আমাদের ছেলে-মেয়েরা তাল মিলিয়ে চলতে পারে বা সেই সংস্কৃতিও যেন রপ্ত করতে বা চর্চা করতে পারে সে জন্য আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তি ও আধুনিক জ্ঞান অর্জন করাও একান্তভাবে দরকার। ’

অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর বক্তৃতা করেন এবং বাংলাদেশে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী স্বাগত বক্তব্য দেন। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত নবনির্মিত আটটি শিল্ককলা একাডেমি ভবনের ওপর একটি তথ্যচিত্রও অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়।

সূত্র : বাসস

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply