অনলাইন ডেস্ক:
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের ব্যাপক জন্মহার বেড়েছে। তা নিয়ন্ত্রণের জন্যও কাজ করছে সরকার। এ ছাড়া রোহিঙ্গারা যাতে কোনোভাবেই বাংলাদেশি পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে না পারে সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আজ রবিবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইন-শৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির চতুর্থ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় এবং নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে যৌথ টহল কার্যক্রম বৃদ্ধির সুপারিশ এসেছে। রোহিঙ্গাদের পালায়ন পর্যবেক্ষণের জন্য উপকূলীয় এলাকায় নৌ টহল কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি করা হবে। গোয়েন্দা নজরদারি চলছে। তা আরো বৃদ্ধি করতে বলা হয়েছে।
রোহিঙ্গারা যাতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে না পারে সে জন্য ইউএনএইচসিআরের ডাটাবেইস ব্যবহার করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে পুলিশ, এপিবিএন, আনসার ও র্যাব কর্তৃক যৌথ টহল চলছে, যা আরো জোরদার করা হবে। ক্যাম্পের বাইরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে টহল দিচ্ছে। প্রয়োজনে সমন্বয়ের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী যৌথ অভিযান চালাবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে অবৈধভাবে স্থাপিত দোকানপাট উচ্ছেদ করা হচ্ছে এবং চলমান থাকবে।
তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী ও টহল রাস্তা নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কাঁটাতারের বেড়া প্রায় ৮০ পার্সেন্ট কাজ শেষ হয়েছে। কোনো রোহিঙ্গা যেন ক্যাম্পের বাইরে যেতে না পারে সে জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বর্তমানে শিশুকেও যে রেশন দেওয়া হচ্ছে আবার বয়স্ক ব্যক্তিকেও একই রেশন দেওয়া হচ্ছে। সুপারিশ এসেছে সমহারে রেশন না দিয়ে বয়সভিত্তিক রেশন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকার জন্মহার বেশি। আমরা ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে বলব। এ কারণে সেখানে জন্ম নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম গ্রহণ করতে যাচ্ছি। প্রতিবছর ৩৫ হাজার শিশু জন্ম নিচ্ছে। ক্যাম্পের অভ্যন্তরে ও আশপাশে মাদক ব্যবসা বা মাদকের ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। নাফ নদ দিয়ে মাদক চোরাচালান রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মাদক চোরাচালান বন্ধে টহল সমন্বিত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ‘
এক প্রশ্নের জাবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ক্যাম্প থেকে কত রোহিঙ্গা বেরিয়ে গেছে তা ইউএনএইচসিআরের কাছ থেকে জানা হবে। তাদের কাছে আপডেটেট ডাটা রয়েছে। আমরা যে কাঁটাতারের বেষ্টনী দিয়েছি সেটা শেষ হলে আমরা কঠিনভাবে রোধ করব। অনুমান করছি, এখানে অনেক মাদক স্টক করা হয়েছে। ‘
আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের ছাপ নিয়েছি তারা কোনোভাবেই পাসপোর্ট করতে পারছে না। আপনারা জানেন আগেও রোহিঙ্গা এসেছিল। তাদের আত্মীয়-স্বজন আছে। পাসপোর্ট অধিদপ্তরকে বলে দেওয়া হয়েছে, কোনোভাবেই যেন রোহিঙ্গারা পাসপোর্ট করতে না পারে। ‘
ছিনাতাইকারী ধরা পড়ছে
এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য ছিনতাই কমেছে। ১০ বছর আগের তুলনায় জিরো হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে দু-একটি ঘটনা ঘটেনি তা নয়। আমাদের পুলিশ অনেক অ্যাক্টিভ। সবাইকে ধরছি, আইনের মুখোমুখি করছি। করোনার কারণে সব কিছু বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ওই রকম সময়ে এ রকম ঘটনা ঘটে যায়। দু-একটা ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ‘
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন