অনলাইন ডেস্ক:
নতুন প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে না জানা দুঃখজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ ও সঠিক ইতিহাস জানাতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। একই দলের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হাওরের বোরো ফসল নষ্টের আশঙ্কার কথা জানিয়ে বোরো ফসল না তোলা পর্যন্ত হাওরে বাঁধ রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এ দাবি জানান।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে মুজিবুল হক গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিলিয়ার গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীরা জাতীয় চার নেতার নাম জানে না, কোনো কোনো শিক্ষার্থী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধারও নাম বলতে পারেনি, তারা স্মৃতিসৌধ ও শহীদ মিনারের মধ্যে পার্থক্য বোঝে না। ৩ নভেম্বর নিয়ে শতভাগ শিক্ষার্থীর ধারণা ভুল, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী কে তারা তা জানে না, স্বাধীনতাবিরোধীদের সম্পর্কে কিছুই বলতে পারে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যদি মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে না জানে তা খুবই দুঃখজনক।
মুজিবুল হক বলেন, এই গবেষণার ফলাফল সবাইকে আতঙ্কিত করেছে। কেন শিক্ষার্থীরা জানবে না; গলদটা কোথায়? ভুলটা কোথায়? বিশেষ করে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয় না। তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ করেন যেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেন যে সব স্কুলে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণিতে পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বাধ্যতামূলক করা হয়।
এর আগে পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনার সুযোগ নিয়ে পীর ফজলুর রহমান বলেন, সুনামগঞ্জ হাওর এলাকার একমাত্র ফসল বোরো। এই ফসল ঘরে তুলতে ১০-১৫ দিন সময় প্রয়োজন। কিন্তু এই মুহূর্তে বোরো ফসল হুমকির মুখে। কারণ হাওরে এখন সীমান্তের ওপার থেকে ঢল নেমে আসছে। সুনামগঞ্জেও বৃষ্টি হচ্ছে। মনে হচ্ছে, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসন এর গুরুত্বটা বুঝতে পারছে না। অথচ এই ফসলহানি হলে হাহাকার দেখা দেবে।
ওই সংসদ সদস্য বলেন, এই ফসলহানি হতে বেশি দিন লাগে না। এক দিনের ভেতর একটা-দুটো বাঁধ ভাঙা শুরু হলেই সমস্ত হাওর তলিয়ে যায়। টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালি বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকেছে। আর কয়েকটি বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। স্থানীয় লোকজন বাঁধ রক্ষায় কাজ করছে। ফসল তোলার জন্য কয়েকটা দিন দরকার। এই ফসলকে গুরুত্ব দিয়ে পানিসম্পদ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উচিত সমস্ত কিছু বাদ দিয়ে ফসল রক্ষায় কাজ করা। ৯ লাখ টন ধান, এটা বিশাল বিষয়।
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে পীর ফজলু বলেন, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এখানে উপস্থিত আছেন। তিনি হাওরে বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রায় ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। যেগুলো নির্মাণ হয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে হয়েছে কি না, যদি না হয়ে থাকে স্পটে গিয়ে যেখানে যা দরকার তাই করতে হবে। এর আগে সরকারি দলের সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী আলোচনার সূত্রপাত করে বিএনপি ও বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যদের সমালোচনা করেন।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন