বরগুনা প্রতিনিধি:
হাজারে মানুষের অশ্রুসিক্ত নয়নে গ্রামের বাড়ি বরগুনায় পারিবারিক করব স্থানে চির-নিদ্্রায় শায়িত হয়েছেন ইউক্রেনে যুদ্ধে রকেট হামলায় নিহত ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান । (১৫-মার্চ) মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের নিজ বাড়িতে নিহত নাবিক হাদিসুরের নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক করব স্থানে মসজিদ সংলগ্ন দাদা-দাদির কবরের পাশে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার (১৪-মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে লাশবাহী ফ্রিজার ভ্যানে করে বরগুনার বেতাগীতে ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান আরিফের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে। এ সময় তার স্বজনদের আহাজারী ও শোকে পুরো এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।
পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন হাদিসুরের বাবা আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও চাচা বেতাগী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান, অতি অল্প সময়ের মধ্যে হাদিসুরের মরদেহ দেশে আনায় প্রধানমন্ত্রীকে তারা ধন্যবাদ জানান এবং একমাত্র চাকুরী ও উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে নির্বাক পরিবারটি সরকার প্রধানের সহযোগীতা চেয়েছেন।
এর পূর্বে সোমবার দুপুর ১২টা ৩ মিনিটে তার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে করে রোমানিয়া থেকে ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুরের মরদেহ ঢাকায় এসে পৌঁছায়। হাদিসুর রহমান আরিফের মরদেহ নিতে বিমানবন্দরে এসেছিলেন তার ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স, চাচা মিজানুর রহমান জীবন, খালা শিরিন আক্তার মমতাজ, খালাতো ভাই সোহাগ হাওলাদার ও বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন।
রোববার (১৩ মার্চ) হাদিসুর রহমানের মরদেহ দেশে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু রোমানিয়া থেকে মরদেহ তুরস্কে আসার পর সেখানে তুষারপাতের কারণে ফ্লাইট বাতিল হয়। চলতি মাসের ২ তারিখে ইউক্রেনে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান আরিফ নিহত যান। ৩ মার্চ অক্ষত অবস্থায় জাহাজটি থেকে ২৮ নাবিককে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে তাদের নিরাপদ বাঙ্কারে রাখা হয়। সেখান থেকে তাদের প্রথমে মলদোভা, পরে রোমানিয়া নিয়ে আসা হয়। গত ৯ মার্চ ২৮ নাবিককে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। ইউক্রেন থেকে ২৮ নাবিককে দেশে ফিরিয়ে আনা হলেও হাদিসুর রহমান আরিয়ের মরদেহ আনা সম্ভব হয়নি । তার মরদেহ ইউক্রেনে ফ্রিজিং করে রাখা হয়েছিল। ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে ২৮ জন নাবিক নিয়ে আটকা পড়েছিল ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজটি।