Friday , 22 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
লালমনিরহাটে ইটভাটা খেয়ে ফেলছে ফসলি জমির মাটি এবং নষ্ট করছে পরিবেশ

লালমনিরহাটে ইটভাটা খেয়ে ফেলছে ফসলি জমির মাটি এবং নষ্ট করছে পরিবেশ

লালমনিরহাট সংবাদদাতা:
ইটভাটার পেটে যাচ্ছে ফসলি জমির মাটি লালমনিরহাট সদর উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে রাতের আঁধারে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এক্সকেভেটর দিয়ে ফসলি জমির উপরের অংশ কেটে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটায় ও বিভিন্ন স্থাপনা ভরাট কাজে। এতে নষ্ট হচ্ছে শত শত বিঘা ফসলি জমি। ট্রাক্টর দিয়ে ওভারলোডিংয়ের ফলে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা।
সরেজমিন দেখা যায়, সদর উপজেলার ইউনিয়নের কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি ও পাশের উপজেলা আদিতমারী ইউনিয়নের দুর্গাপুর, ভেলাবাড়ী,সাপটিবাড়ী, কমলাবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে চলছে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার উৎসব। গত এক মাস ধরে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত অন্তত ২০ থেকে ২৫টি স্থান থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে ভাটায়। সদর উপজেলায় বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে প্রায় ৭০টির বেশি ইটভাটা আছে। এসব ইটভাটায় মাটির চাহিদা পূরণ করতে কৃষিজমি থেকে মাটি নেওয়া হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। মাটি ব্যবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে প্রতি শতকে জমির মাটি কিনে নেন পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকায়।
কুলাঘাট ইউনিয়নের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, পাশেই ভাটা এজন্য জমির মাটি বিক্রি করি লাভের আশায়, তাছাড়া অনেক সময় জমির মাটি জোর করে কেটে নিয়ে যায়। আশপাশের পরিবেশ ধুলাবালিতে পরিনত হয় এবং জমিগুলোতে বসতবাড়ি তৈরি করা যায় না সেই সাথে করা যায় না আবাদ । আমরা উপজেলায় অভিযোগ করলে, তারা একে অপরের কাজ বলে জানায়।  প্রকৃত পরিবেশ নষ্টকারী ও ভূমিদস্যুদের প্রতি কোনো আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন না স্হানীয় প্রসাশন।
নাম  প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক কৃষক বলেন, ব্যবসায়ীরা তাদের মাটি বিক্রির ব্যাপারে উৎসাহিত করছে। জমির কোনো ক্ষতি হবে না। বর্ষা যখন আসবে জমির মাটি পূরণ হয়ে তখন ফসল ফলানো আবার যাবে।
স্হানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, কৃষকদের যেসব জমিতে চাষাবাদ হয় না, সেসব জমির মাটিগুলো আমাদের কাছে বিক্রি করে জমির মালিক। আমরা এগুলো ইট-ভাটা ও ভিটাবাড়ি ভরাটের কাজে বিক্রি করে থাকি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুকুল চন্দ্র সরকার বলেন(মোগলহাট), মাটির উপরিভাগের ১০-১৫ ইঞ্চির মধ্যে উর্বরতা শক্তি থাকে। মাটি খুঁড়ে বিক্রি করার ফলে তা পুনরায় ফিরে আসতে সময় লাগে। এছাড়া মাটির এ অংশে যেকোনো ফসল বেড়ে উঠার গুণাগুণ সুরক্ষিত থাকে। বীজ রোপণের পর এই অংশ থেকেই ফসল প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান গ্রহণ করে বড় হয়। এটাকে ‘টপ সয়েল’ বলে। এই ‘টপ সয়েল’ একবার কেটে নিলে সে জমিতে আর প্রাণ থাকে না‌।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা মাসুম বলেন,  কৃষি সভায় ইটভাটার লোকজনদের নিয়ে বিষয়টি আলোচনা করা হবে। কৃষকদের সচেতন করতে হবে। সচেতনতার পরেও যদি কেউ অমান্য করে, অভিযোগ পেলে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply