অনলাইন ডেস্ক:
আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আরো অনেক চিঠিপত্র লেখালেখি এবং দেশের স্বার্থে আঘাত আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। গতকাল শনিবার এক ভার্চুয়াল আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেন। এ সময় সবাইকে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সঠিক তথ্য তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে শুরু হওয়া লবিস্ট ষড়যন্ত্র এবং বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের করণীয়’ শীর্ষক ওই ভার্চুয়াল আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধান অতিথি ছিলেন।
বাংলাদেশের সমালোচনা করে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একজন সদস্যের চিঠি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চিঠিটি আমি যখন পড়ছিলাম, তখন মনে হলো অন্য কোনো দেশ সম্পর্কে পড়ছি। এই রকম আরো ব্যক্তি, বিশেষ করে আমাদের উল্টো দল (প্রতিপক্ষ) এ রকম চিঠি লেখাতে পারে সম্ভবত।
এসব বিষয়ে প্রবাসীদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয়, আগামী দিনগুলোতে বিভিন্ন রকমের ষড়যন্ত্র হবে। বিভিন্নভাবে আমাদের ওপর আঘাত হানা হবে। আমার ধারণা, আগামী দুই বছর আমাদের ওপর অনেক বানোয়াট মিথ্যা আঘাত আসবে। ’
মন্ত্রী বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্র যে দল করে, তাদের জন্মই হয়েছিল ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। তারা কোনোভাবেই ষড়যন্ত্র থেকে দূরে থাকতে পারছে না। সব সময়ই কোনো না কোনো ষড়যন্ত্র করছে। ’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ও জামায়াত শুধু যুক্তরাষ্ট্রে ৪১ কোটি ৩২ লাখ ডলার ব্যয় করেছে লবিস্টের পেছনে। অন্য দেশগুলোতে কী করছে, তা জানি না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের অনিষ্ট করতে বিরোধী দল লবিস্ট নিয়োগ করে, এটা আমরা প্রথম জানলাম। ’
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচন কমিশনে যে বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করেছে, তাতে লবিস্ট নিয়োগে অর্থ ব্যয়ের বিষয়টি আছে কি না, তা দেখা প্রয়োজন।
অন্য আলোচকদের বক্তব্যের সূত্র ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি আয়-ব্যয়ের যে হিসাব দিয়েছে, তাতে লবিস্টের পেছনে ব্যয় উল্লেখ না করে থাকলে, জানি না, আইনের নিয়মে তাদের নিবন্ধন বাতিল বা অযোগ্য ঘোষণা করা যায় কি না। ’
এ ছাড়া বিদেশে লবিস্টের জন্য অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়ে থাকলে অর্থপাচার হয়েছে কি না এবং দেশের বিরুদ্ধে প্রচারের কারণে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা যায় কি না, তা-ও দেখার সুযোগ আছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশের অমঙ্গলের জন্য ১৮টি চিঠি লিখেছে আমেরিকার সরকার, কংগ্রেস, সিনেট এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবিশেষদের কাছে, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের কাছে, তারা সব সময় বিভিন্ন অসত্য প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়গুলো দেশবাসীর কাছে জানাতে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন বিশেষ উদ্যোগ নিতে পারে। ’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে আমাদের সবচেয়ে বড় লবিস্ট প্রতিষ্ঠান হলো আমাদের দূতাবাস। জনগণের করের টাকায় দূতাবাসগুলো আছে। তারা দেশের ভালো দিকগুলো সেখানে তুলে ধরে। ’
প্রবাসীদের দেশের পক্ষে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সারা জীবন লবিস্টের কাজ করেছি, কিন্তু কারো কাছ থেকে এক পয়সা নিইনি। বিনা পয়সায় কাজ করেছি। ’
মন্ত্রী বলেন, ‘এ রকম আরো অনেক প্রবাসী আছেন, যাঁরা শুধু বিনা পয়সায় নয়, নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে লবিংয়ের কাজ করেন। আমি তাঁদের বলব, আপনারা একটু সোচ্চার হোন। ’
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন