নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি :
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের ঐতিহ্যবাহী ঠাণ্ডা কালী বাড়ি মেলাকে ঘিরে বেলুন ফোলানের সময় হিলিয়াম গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অন্ততঃ ৪৬ জন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় উপজেলার মৌকরা ইউনিয়নের বিরুলি উত্তর পাড়া মুন্সী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।
আহতদের অনেকের হাত, পা উড়ে যাওয়াসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান পুড়ে যায়। অনেকের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গুরুতর আহতদের নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার লামইয়া সাইফুল ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ আহতদের দেখেতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান । স্থানীয় নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান সাঈফ উদ্দিন আলমগীর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আহতদের চিকিৎসায় সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
আহতরা হলেন, উপজেলার মৌকরা ইউনিয়নের বিরুলী উত্তর পাড়া মুন্সী বাড়ির বেলুন ব্যবসায়ী আবুল কালামের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩৩), আনোয়ারের মেয়ে আফনান (৫), মরিয়ম (৭), বোন ফারজানা (১৭), আনোয়ারের সহযোগী ব্যবসায়ী ঝাটিয়াপাড়া গ্রামের আলী আকবরের ছেলে আবদুর রব (৩০), পৌরসভার নাওগোদা গ্রামের মুসলিমুর রহমানের ছেলে আলমগীর (৩০), বিরুলী গ্রামের জাফরের মেয়ে উম্মে হাবিবা (৯), জসিমের ছেলে তুষার (৭), ফারুকের ছেলে রায়হান(১২), আবুল কালামের ছেলে বাছির (১৬), মাঈন উদ্দিনের ছেলে মাসুদ (১২), সেলিমের মেয়ে নিসু (১২), তার ছেলে সম্রাট (১০), শাহীনের মেয়ে শারমিন আক্তার (৫), আবদুল হালিমের ছেলে নাঈম (১৩), আবদুল কাদিরের স্ত্রী নাছরিন (৩৫), শাহাবুদ্দিনের ছেলে সবুজ (১১), সাইফুলের মেয়ে নুরুন্নাহার (৯), রতনের মেয়ে জান্নাত (৯)সহ অন্ততঃ ৪৬ জন আহত হয়েছে।
সরেজমিনে ঘটনাস্থল ঘুরে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আগামী শনিবার উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের মোগরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রতি বছরের ন্যায় অনুষ্ঠিতব্য ঐতিহ্যবাহী ঠাণ্ডা কালী বাড়ি মেলা উপলক্ষে হিলিয়াম গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আনোয়ার হোসেন তার বাড়িতে বেলুনে গ্যাস ফুলাচ্ছিলেন। এসময় আনোয়ারের চারপাশ শিশুরা ঘিরে রাখে। এক পর্যায়ে আনোয়ার বেলুনে গ্যাস ফোলানোর সময় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হলে আনোয়ার হোসেনসহ তার চারপাশে থাকা শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী ছেলে মেয়েসহ অন্ততঃ ২৫জন আহত হয়।
এসময় পাশ্ববর্তী আনোয়ারের ঘরের টিনশেড বেড়া বিচ্ছিন্নসহ গ্যাস সিলিন্ডারের বিচ্ছিন্ন অংশ ৫০ ফুট দূরবর্তী শের আলীর বাড়িতে পড়ে। যদিও এর আগে উপজেলা প্রশাসন মেলাটি বন্ধ ঘোষণা করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার লামইয়া সাইফুল ইসলাম বলেন, এ পর্যন্ত ৪৬ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আহতদের চিকিৎসায় সবধরণের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন আহতদের দেখতে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ যান। পরিস্থিতি অনুযায়ী আমরা পরবর্তী ব্যবস্থ্যা গ্রহণ করবো।