অনলাইন ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো একটা দুর্ঘটনা ঘটলে চালককে ধরে পেটানো হয়। অনেক সময় গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা হয়। দুর্ঘটনাটা কেন ঘটলো, কার জন্য ঘটলো-বিবেচনা করতে হবে। গণপিটুনি, গাড়ি ভাঙচুর করবেন না। সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। আর সবার ট্রাফিক রুল সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার এবং সেটা মেনে চলা দরকার। মোবাইল ফোন কানে দিয়ে সড়ক পার, রেললাইনে চলা বন্ধ করতে হবে।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত ঢাকা এয়ারপোর্ট মহাসড়কে শহিদ রমিজ উদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন পথচারী আন্ডারপাস; সিলেট শহর বাইপাস-গ্যারিসন লিংক-৪ মহাসড়ক; বালুখালী (কক্সবাজার)-ঘুনধুম (বান্দরবান) সীমান্ত সংযোগসড়ক এবং রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর চেংগী নদীর উপর ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতু উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন৷ প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করেন।
তিনি বলেন, আমি একটা কথা বলতে চাই, দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। অনেক সময় গাড়ির ধাক্কা লেগে পড়ে যায়। কিন্তু গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলবে এই ভয়ে চালক না দাঁড়িয়ে দ্রুত গাড়ি টেনে চলে যায়। গাড়িটা দাড়ালে লোকটি হয়তো বেঁচে যেত। কিন্তু ড্রাইভার ভয়ের কারণে টেনে চলে গেলে দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তি মারা যায়। তাই কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না।
এছাড়াও দুর্ঘটনারোধে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ট্রাফিক রুল পড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রাস্তা পারাপারে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সহায়তা করতে স্কুল কর্তৃপক্ষের লোক রাখারও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়ার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় গাড়ির চালক ও হেলপারদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি তারা অনেক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়ে, ঝিমিয়ে পড়ে। সে জন্য মহাসড়কের পাশে চালক ও যাত্রীর জন্য বিশ্রামের ব্যবস্থা নিচ্ছি। সুনির্দিষ্ট দূরত্বে একটি করে বিশ্রামাগার থাকবে। পাশাপাশি চালকদের ট্রেনিংয়েরও ব্যবস্থা করছি। গাড়ি বাড়ছে, চালক বাড়ছে না। সে জন্য সমস্ত উপজেলায় চালকদের ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। তাহলে এ সংকট কিছুটা কমবে। ড্রাইভার ক্লান্ত হলে গাড়ি থামাবেন, রেস্ট নেবেন। কিন্তু হেলপার দিয়ে চালানো ঠিক নয়, এটা অন্যায় কাজ।
করোনার সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ব্যাপক কর্মসূচি ছিল আমরা ভার্চুয়ালি করছি। কারণ করোনা নতুনভাবে হানা দিয়েছে। সকলে নিয়ম মেনে চলবেন। মাস্ক পরবেন। সবকিছু স্বাভাবিক চলুক আমরা চাই। উন্নয়নের নানা কাজ করছি। ফলে আমরা দ্রুত এগিয়ে যাবো। ২২ সালে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প আছে উদ্বোধন করবো আমরা। দেশের মানুষের জন্য গত ১৩ বছরে আমরা নানা অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছি। এটি আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং চিফ মেজর জেনারেল ইবনে ফজল শায়েকুজ্জামানসহ বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। প্রকল্পের স্পট থেকে সরকারি কর্মকর্তা ও উপকারভোগীরাও অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন