কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ইউপি নির্বাচনের পরেরদিন পৃথক পৃথক মেম্বর প্রার্থীদের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইজন গুলিবিদ্ধসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়াও ১১ টি ঘড়বাড়ির ভাংচুর ও গুলিরবর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চর জগন্নাথ গ্রামে সোমবার সকাল ৮ টার দিকে দুই পরাজিত মেম্বর কাসেম ও ইসলাম সরদারের সমর্থকদের মাঝে এবং দুপুরে শিলাইদহ ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামে জয়ী মেম্বর হানিফ ও পরাজিত মেম্বর মিরাজ সরদার গ্রুপের মাঝে এঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন শিলাইদহের কল্যাণপুর গ্রামের জব্বারের ছেলে আনারুল হক (৩৫), মৃত মনসেরের ছেলে মোঃ আব্দুল হক (৫০), বানাত আলীর ছেলে মোঃ হিকমান সরদার (৬০), কাইয়ুম আলীর ছেলে মোঃ আরাফাত হোসাইন, আবুল হোসেনের কণ্যা মোছাঃ কাজলি খাতুন (৫০), আলাই সরদারের স্ত্রী মোছাঃ শেফালী বেগম (৫০) আব্দুল ওহাবের স্ত্রী
শিরিনা খাতুন (৫০) ও আজাদ (৩৫)।
এছাড়াও গুলিবিদ্ধ আহতরা জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চর জগন্নাথপুর গ্রামের হানিফ সরদার ও আইয়ুব সরদার।তাঁরা কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, জগন্নাথপুর ইউপির ১ নং ওয়ার্ডের দুই পরাজিত মেম্বার প্রার্থী কাশেম প্রামাণিক ও ইসলাম সর্দারের সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় দু-পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়ার মাঝে গুলি বর্ষনের শব্দ শুনতে পায় স্থানীয়রা। এসময় ইসলাম সরদার গ্রুপের দুইজন আহত হয় এবং তাঁদের অন্তত ৫ টি বাড়িতে ভাংচুর চালানো হয়।
অন্যদিকে শিলাইদহ ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের কল্যাণপুর গ্রামে নির্বাচিত মেম্বার আবু হানিফ শেখে সমর্থক ও পরাজিত মেম্বার প্রার্থী মিরাজ সর্দারের সমর্থকদের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পরাজিত মিরাজ মেম্বরের ৭ জন গুরুতর আহত হয়।
এবিষয়ে চর জগন্নাথপুরের ইসলাম মেম্বর বলেন, সকালে প্রতিপক্ষের লোকজন আগ্নোস্ত্রসহ আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। আরো ৫ বাড়িতে ভাংচুর করা হয়।
কাশেম মেম্বরের ছেলে জাফর বলেন, ‘ গুলির কথা মিথ্যা। আর তারা নিজেরা নিজেরায় মারামারি করে আমাদের দোষ দিচ্ছে।’
কল্যাণপুর গ্রামের পরাজিত মিরাজ মেম্বর বলেন, ভোটে জয়লাভ করে হানিফ মেম্বর প্রভাব বিস্তারে আমার লোকদের উপর হামলা করেছে। এতে ৭ জন আহত হয়েছে এবং ৬ টি ঘরবাড়ি ভাংচুর করা হয়।
হানিফ মেম্বর বলেন, আমার লোকজন তারেক চেয়ারম্যানের বাড়িতে দেখা করতে গিয়েছিল। এই সুযোগে আজাদ নামের এক কর্মীর উপর হামলা চালায়। এতে সে আহত হয়। খবর লোকজন ছুটে আসলে মিরাজ মেম্বর পালিয়ে যায়। তবে আমরা কোন মারামারি করিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আকুল উদ্দিন বলেন, আহতের শরীরে বিভিন্ন ইনজুরি। তবে গুলিবিদ্ধ কি না তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রেজাল্ট আসলে জানা যাবে।
এবিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, শিলাইদহ ও জগন্নাথপুর ইউনিয়নে মেম্বরদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। আহতের খবর পাওয়া গেছে। তবে লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, গুলিবর্ষণের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
ক্যাপশনঃ কুমারখালীর জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চর জগন্নাথপুর গ্রামে দুই মেম্বরের সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ ও ভাংচুর ছবি সকালে তোলা
ক্যাপশনঃকুমারখালীর জগন্নাথপরে গুলিবিদ্ধ আহত হানিফ সরদার ও আইয়ুব সরদার।