চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার আব্দুল মান্নান নামে এক ব্যাক্তিকে অপহরণের পর জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের দেহরক্ষীসহ ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়ের করা চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত। একই সাথে তাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর তারিখ (২৬ জানুয়ারি) পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে।
রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন নাহার পুলিশের দেওয়া চার্জশিট গ্রহণ করে এ আদেশ দেন। এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর ওই ছয় পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। আসামীরা বর্তমানে জামিনে আছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীরের দেহরক্ষী কনস্টেবল মোরশেদ বিল্লাহ, নগর পুলিশের উপকমিশনার গোয়েন্দা (পশ্চিম) মনজুর মোরশেদের দেহরক্ষী কনস্টেবল মো. মাসুদ, নগরের দামপাড়া রিজার্ভ ফোর্স অফিসে কর্মরত কনস্টেবল শাকিল খান ও এস্কান্দর হোসেন, নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার কর্ণফুলী কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম ও নগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর) কর্মরত কনস্টেবল আবদুল নবী।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দেওয়া চার্জশিট আদালত গ্রহণ করেছেন। একই সাথে আগামী তারিখ (২৬ জানুয়ারি) পর্যন্ত আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেছেন। ওইদিনই তাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর বিষয়ে শুনানি হবে।’
আদালতে মামলা নথি থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের গত ৩ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে চারটি মোটরসাইকেল যোগে ৮ জন তরুণ আনোয়ারা থানাধীন পূর্ব বৈরাগ গ্রাম থেকে আবদুল মান্নান নামে এক ব্যাক্তিকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় তারা নিজেদের পুলিশের লোক বলে পরিচয় দেয়। এমনকি একজনের গায়ে ডিবি লেখা জ্যাকেটও ছিল। পরে ওই তরুণরা আবদুল মান্নানকে পটিয়ায় ভেল্লা পাড়া এলাকায় নিয়ে আটকে রাখে। তরুণদের দাবি, আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে থানায় অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। পরবর্তীতে তাদের ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেয়া হলে তারা তাকে ছেড়ে দেয়। তরুণদের কথপোকথনে মোর্শেদ নামে একজনের নাম জানতে পারে আবদুল মান্নান। এ ঘটনায় ওই বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি আনোয়ারা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন আবদুল মান্নান। মামলার সূত্র ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে ৬ পুলিশ কনস্টেবলের সম্পৃক্ততা পায়। এ ঘটনায় তাদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তাদের সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় মামলা করা হয়।