দিলীপ কুমার আগরওয়ালা সাধারণ সম্পাদক
সকালবেলা ডেস্ক: দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বেসরকারি খাতে গোল্ড রিফাইনারি স্থাপনকারী এবং সর্ববৃহৎ শিল্প উদ্যোক্তা পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি-বাজুসের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেড ও আরিশা জুয়েলার্স লিমিটেডের এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্বপ্ন দেখছেন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশে উৎপাদিত সোনার গহনা এবং বার অচিরেই বিশ্ববাজারে রপ্তানি হবে। দেশের খ্যাতনামা উদ্যমী শিল্প উদ্যোক্তা সায়েম সোবহান আনভীর তাঁর নেতৃত্বাধীন পুরো প্যানেলকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করায় সারা দেশের সব জুয়েলারি ব্যবসায়ীর প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করেছেন। এ নির্বাচনে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলিপ কুমার আগরওয়ালা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
গতকাল বিকালে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেটে বাজুস কার্যালয়ে সংগঠনটির ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটির ২০২১-২০২৩ মেয়াদে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাজুস নির্বাচন বোর্ডের সদস্য এফবিসিসিআই পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী জুয়েল এবং ঢাকা চেম্বারের পরিচালক হোসেন এ শিকদার। তাঁদের স্বাক্ষরিত নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল বাজুসের নোটিস বোর্ডে গতকাল প্রকাশ করা হয়। বাজুস নির্বাচনে আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এফবিসিসিআইর সহসভাপতি আমিন হেলালী। আপিল বোর্ডের দুই সদস্য ছিলেন এফবিসিসিআইর দুই পরিচালক ড. কাজী এরতেজা হাসান ও এম জি আর নাসির মজুমদার।
নির্বাচনের ফল ঘোষণাকালে নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল বলেন, ‘বাজুস অফিসের সবার সহযোগিতায় আমরা ২০২১-২৩ মেয়াদের নির্বাচন সম্পন্ন করতে পেরেছি। আশা করছি নতুন কমিটি দেশের জুয়েলারি খাতে যেসব সমস্যা আছে তা সমাধান করতে পারবে এবং সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচিত এ কমিটি একটি জুয়েলারি নীতি প্রণয়ন করবে; যা হবে ব্যবসাবান্ধব। যা ব্যবসাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা জুয়েলারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তাদের এ কমিটি আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে পরিচিত করাতে পারবে এবং বাংলাদেশের পণ্য সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে পারবে। এ প্রত্যাশায় আমাদের নতুন কমিটি হয়েছে। আমরা আনন্দিত আপনারা যাঁকে সভাপতি নির্বাচিত করেছেন তিনি বাংলাদেশের প্রখ্যাত বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি। দেশের জুয়েলারি সেক্টরকে নতুনভাবে আমাদের সামনে উপস্থাপন করার জন্য তাঁরই দায়িত্ব নেওয়ার প্রয়াস। জুয়েলারি খাতে যেসব সমস্যা আছে আপনাদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সেসব সমস্যার সমাধান করবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করি।’
বাজুসের বিদায়ী সভাপতি এনামুল হক খান দোলন বলেন, ‘আজকে আমাদের অত্যন্ত আনন্দের দিন। আমরা জুয়েলারি সমিতির নতুন কমিটি পেয়েছি, যার নেতৃত্বে আছেন দেশের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তা পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর। এ নতুন কমিটি আমাদের জুয়েলারি খাতকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’ বাজুসের পুনর্নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, ‘আমরা তখনই রপ্তানিতে যেতে পারব যখন দেশে জুয়েলারির কাঁচামাল সহজলভ্য হবে। আমরা আশা করি ২০২২ সালের মধ্যে দেশে আমাদের কাঁচামাল সহজলভ্য হবে। ইতিমধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপ রিফাইনারি স্থাপন শেষ করেছে। যেটা আমাদের বিগত ৫০ বছরের দাবি ছিল। বাইরে থেকে কাঁচামাল আনতে এখনো অনেক জটিলতা রয়েছে। কাঁচামাল সহজলভ্য হলে রপ্তানি আমাদের জন্য সহজ হবে। এটি সম্ভাবনাময় একটি খাত।’
বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি-বাজুস নির্বাচন বোর্ড ঘোষিত চূড়ান্ত ফলের তথ্যানুযায়ী সংগঠনটির ২০২১-২০২৩ মেয়াদে নবনির্বাচিত সভাপতি বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে নির্বাচিত সাতজন সহসভাপতি হলেন- মেসার্স দি আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার গুলজার আহমেদ, নিউ জেনারেল জুয়েলার্স লিমিটেডের আনোয়ার হোসেন, অলংকার নিকেতন (প্রা.) লিমিটেডের এম এ হান্নান আজাদ, জড়োয়া হাউজ (প্রা.) লিমিটেডের বাদল চন্দ্র রায়, সিরাজ জুয়েলার্সের ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন, এল রহমান জুয়েলার্সের মো. আনিসুর রহমান দুলাল এবং দি আমিন জুয়েলার্সের কাজী নাজনীন ইসলাম নিপা। বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটিতে টানা চতুর্থবারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এফবিসিসিআই পরিচালক এবং সংগঠনটির সাবেক সহসভাপতি দিলিপ কুমার আগরওয়ালা। এ কমিটিতে নির্বাচিত নয়জন সহসম্পাদক হলেন- গোল্ড ওয়ার্ল্ডের কর্ণধার মাসুদুর রহমান, ফেন্সী ডায়মন্ডের সমিত ঘোষ অপু, ভেনাস ডায়মন্ড কালেকশনের বিধান মালাকার, মেসার্স রিজভী জুয়েলার্সের মো. জয়নাল আবেদীন খোকন, নিউ সোনারতরী জুয়েলার্সের মো. লিটন হাওলাদার, মেসার্স বৈশাখী জুয়েলার্সের নারায়ণ চন্দ্র দে, মণি মালা জুয়েলার্সের মো. তাজুল ইসলাম লাভলু, গোল্ড কিং জুয়েলার্সের এনামুল হক ভুঞা লিটন এবং পূরবী জুয়েলার্স (প্রা.) লিমিটেডের মুক্তা ঘোষ। কমিটিতে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মেসার্স কুন্দন জুয়েলারি হাউজ ও জায়া গোল্ডের কর্ণধার উত্তম বণিক। নবনির্বাচিত কমিটিতে ১৬ জন সদস্য হলেন- গ্রামীণ ডায়মন্ড হাউজের কর্ণধার ও বাজুসের সাবেক সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, শারমিন জুয়েলার্স ও ডায়মন্ড অ্যান্ড ডিভাসের কর্ণধার এবং বাজুসের বিদায়ী সভাপতি এনামুল হক খান দোলন, সুলতানা জুয়েলার্স (প্রা.) লিমিটেডের মোহাম্মদ বাবুল মিয়া, দি ডায়মন্ড সীর মো. ইমরান চৌধুরী, পি সি চন্দ্র জুয়েলার্সের পবিত্র চন্দ্র ঘোষ, জুয়েলারি হাউজের মো. রিপনুল হাসান, রহমান জুয়েলার্সের আলহাজ মো. মজিবুর রহমান খান, মেসার্স লিলি জুয়েলার্সের বাবলু দত্ত, রজনীগন্ধা জুয়েলার্স লিমিটেডের মো. শহিদুল ইসলাম (এমডি), দি পার্ল ওয়েসিস জুয়েলার্সের জয়দেব সাহা, মেসার্স সাজনী জুয়েলার্সের ইকবাল উদ্দিন, শতরূপা জুয়েলার্সের কার্তিক কর্মকার, আফতাব জুয়েলার্সের উত্তম ঘোষ, শৈলী জুয়েলার্সের মো. ফেরদৌস আলম শাহীন, জারা গোল্ডের কাজী নাজনীন হোসেন জারা এবং রয়েল মালাবার জুয়েলার্স (বিডি) লিমিটেডের মো. আসলাম খান।