কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাঠে-মাঠে ধান কাটার ধুম পড়েছে। চারদিকে পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ। কিছুদিন আগেও সবুজে ঘেরা ছিল এই মাঠগুলো। এখন সেখানে পাকা ধানে ভরপুর। মাঠে মাঠে এখন হলদে সোনালি পাকা আমন ধান শোভা পাচ্ছে। পাকা ধানের সুভাসে চাষির স্বপ্ন বাতাসে ভাসছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কেউ ধান কাটছেন, কেউ আঁটি বাঁধছেন। কেউ কেউ ধান নিয়ে যাচ্ছেন বাড়ির আঙিনায়। কৃষকের আঙিনায় শুধু ধান আর ধান। যেন দম ফেলার সময় নেই। ফলে কর্ম ব্যস্ততায় দিন কাটছে কৃষকদের। আমন ধানের গন্ধে ভরে উঠেছে গ্রামীণ জনপদ। আমনে বাম্পার ফলন হওয়ায় আর বাজারে দাম ভালো থাকায় কৃষকদের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক।
এ বিষয়ে যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামের কৃষক লোকমান হোসেন বলেন, ‘এবার সময়মতো বৃষ্টিপাত না হওয়া অনেকে ধানের পরিবর্তে অন্য ফসলের চাষ করেছেন। তবে এবার আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকেরা এখন ধান কাটায় ব্যস্ত। শ্রমিক নিয়ে এবার তেমন কোন সমস্যা নেই। ফলে কৃষকেরা রয়েছেন স্বস্তিতে।’ সদকী ইউনিয়নের করাদ কান্দি গ্রামের কৃষক কেয়া শেখ বলেন, ‘ধান কাটা চলছে পুরোদমে। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মনে আনন্দের বন্যা বইছে।
শিলাইদহ ইউনিয়নের ধান চাষি নজরুল বলেন, ‘কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছেন। গত কয়েক বছর ধানের বাজার ভালো। আশা করি এবার ন্যায্যমূল্য পাব।’ উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ হাজার ৪৮ হেক্টর জমিতে। অর্জিত হয়েছে ১৪ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার ৩৩ হেক্টর কম। সময়মতো বৃষ্টিপাত না হওয়া এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে জিকে খালে পানি থাকায় কৃষকেরা পানি সমস্যায় ভুগছিল। তাই ধানের পরিবর্তে অনেকে সবজি ও ডাল চাষে আগ্রহ দেখিয়েছি। এ বছর উপজেলায় ৮ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে সবজির চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৩ হাজার ২০০ হেক্টর বেশি।
এ ছাড়া মাষকলাই ডাল ৩৩৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৫০ হেক্টর বেশি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস বলেন, ‘কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে এবার ধানের ভালো ফলন হয়েছে। ধানের বাম্পার ফলনের ফল পাবেন কৃষকেরা। আবার বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায়ও লাভবান হবেন কৃষকেরা।’