অনলাইন ডেস্ক:
ঢালাওভাবে নারী-পুরুষ সমান অধিকারের কথা বলা হলেও দেশে পুরুষ নির্যাতন বন্ধে কোনো আইন নেই। আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এ কথা জানান।
নারী ও পুরুষের মধ্যে সুষম ও উন্নত সম্পর্ক তৈরিতে করনীয়’ শীর্ষক ওই সেমিনারে বক্তারা বলেন, নারী-পুরুষ উভয়ের প্রয়োজন ও গুরুত্ব রয়েছে। তবে এ দুইয়ের মধ্যে বৈষম্যও রয়েছে। নারী-পুরুষের আন্তঃসম্পর্ক উন্নয়ন এবং নারী ও পুরুষ উভয়ের লৈঙ্গিক সমতা নিশ্চিত করার সময় এসেছে। সেই সঙ্গে নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য দূর, অধিকার, সম্মান এবং আইনের সমতা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে।
‘বিশ্ব পুরুষ দিবস’ উপলক্ষে সেমিনারের এ আয়োজন করে বেসরকারি সংগঠণ এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ডিআরইউর সামনে জড়ো হয়ে বেলুন উড়িয়ে পুরুষ দিবসের শুভ উদ্বোধন করা হয়। এরপর সাড়ে ১০ টার দিকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদিক্ষণ করে।
সেমিনারে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. লিটন মিয়া বলেন, আমাদের সংবিধানে বলা হয়েছে নারী-পুরুষ সবাই সমান। কিন্তু বাস্তবে এর মিল নাই। আমরা কোর্ট-কাচারিতে অনেক সময় দেখি বিভিন্ন মামলায় পুরুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছে, কিন্তু তার প্রতিকারের কোনো উপায় নেই। তিনি বলেন, আসলে পুরুষ নির্যাতন দমনের কোনো আইন নেই। বর্তমানে পুরুষ অধিকার রক্ষা ও নির্যাতন দমন আইন করা প্রয়োজন। এটা সময়ের দাবি। এই আইন তৈরি হলে নারী-পুরুষের মধ্যে অনেক বৈষম্য দূর হবে।
সেমিনারে এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের যুগ্ম আহ্বায়ক এম রহমান বলেন, পুরুষরা এখন ঝুঁকির মুখে আছে। সবাই কথা বলে সমান অধিকারের। নির্মাণ কাজে সমান নারী-পুরুষ শ্রমিক কাজ করুক। কিন্তু সবাই মুখে বলে সমান অধিকার, আর বাস্তবে অগ্রাধিকার।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম তার বক্তব্যে অভিযোগ করেন, প্রতিনিয়ত পুরুষরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কিন্তু তাদের বিচার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘সমাজে উভয়ের সম্মতিতে নারী-পুরুষ শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হচ্ছেন, কিন্তু মামলা হচ্ছে পুরুষটির বিরুদ্ধে। তাকে ধর্ষক বানানো হচ্ছে। যদি নারী-পুরুষের সম অধিকার হয়ে থাকে, তবে অপরাধের শাস্তিও সমান হওয়া দরকার। যারা সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হচ্ছেন সেখানে নারী-পুরুষ উভয়ে দোষী। যদি শাস্তি দিতে হয় তবে দুজনকেই দেওয়া হোক। কিন্তু তা না করে শুধু পুরুষকেই দোষারোপ করা হচ্ছে, শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।’
এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহাম্মেদ, ফাউন্ডেশনের আইন উপদেষ্টা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাওসার হোসেন, নারী আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান প্রমুখ।