অনলাইন ডেস্ক:
বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে একক কোনো দেশ বা গোষ্ঠীর আধিপত্য চায় না বাংলাদেশ। গতকাল বুধবার ঢাকায় ‘ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ)’ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ কথা জানান। তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ ‘ইন্দো প্যাসিফিক’ চায়।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) খুরশেদ আলমও বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, ইন্দো প্যাসিফিক নিয়ে একেক দেশের একেক রকম ভাবনা আছে। আইওআরএর মতো ফোরামের বৈঠকে ইন্দো প্যাসিফিক কৌশল (আইপিএস) বিষয়ে একমত হওয়া কঠিন। আর আইপিএস এখনো রূপ বদলাচ্ছে। আগামী জুলাই মাসে আইওআরএর বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে আইওআরএর আইপিএস নির্ধারণ স্পষ্ট হবে।
এদিকে গতকালের বৈঠকে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে আইওআরএর সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছে। আইওআরএর ‘ডায়ালগ পার্টনার’ হয়েছে রাশিয়া। সৌদি আরবও ‘ডায়ালগ পার্টনার’ হতে চেয়েছিল। তবে তা প্রক্রিয়াগত কারণে হয়নি। বাংলাদেশ সভাপতি হিসেবে আগামী দিনে এ বিষয়টি দেখবে।
ঢাকায় মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক থেকে ইন্দোনেশিয়ার সালমান আল ফারিসিকে আইওআরএর নতুন মহাসচিব হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি আগামী ১ জানুয়ারি ওই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। বৈঠকে আইওআরএ দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই গ্রুপের সমন্বয়ক হিসেবে থাকবে ভারত।
দুর্যোগকালীন ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা এবং ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার শর্ত ও স্ট্র্যাটেজিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে আইওআরএ গাইডলাইন চূড়ান্ত হয়েছে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কভিড-১৯-এর প্রভাব ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রেক্ষাপট নিয়ে সদস্য রাষ্ট্র ও ডায়ালগ পার্টনারদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
আইওআরএ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, চীন সুনির্দিষ্ট দেশকেন্দ্রিক কোনো ইস্যু তোলেনি বলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, টিকা বিশ্বের কম দেশে উৎপন্ন হয়। বৈঠকে টিকা উৎপাদনকারী কয়েকটি দেশ ছিল। বাংলাদেশ সব সময় বলেছে, টিকা সবার জন্য সহজলভ্য করতে হবে। গতকালের বৈঠক থেকে টিকা সহজলভ্য করতে টিকা উৎপাদনকারী দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশসহ আইওআরএর ২৩টি সদস্য রাষ্ট্র এবং ডায়ালগ পার্টনার ৯টি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র, উন্নয়ন ও কমনওয়েলথ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী লর্ড তারিক আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি সেক্রেটারি অব স্টেট কেলি কেইডারলিংসহ বিভিন্ন দেশের ১২ জন মন্ত্রীসহ ৮২ জন কর্মকর্তা সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠকের ফাঁকে বিভিন্ন দেশের ১১ জন মন্ত্রী যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।