কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে অতি উৎসাহী কিছু লোক জাতীয় পতাকা অবমাননার মত কাজে মেতে উঠেছে। এমন ঘটনা দেখেও দেখছেননা উপজেলা প্রশাসন।নৌকার প্রচার প্রচারনায় এমনই এক চেয়ারম্যান প্রার্থী জাতীয় পতাকার রং অনুসরণ করে নৌকার (আদলে) তোরণ নির্মান করার ঘটনায় দৌলতপুরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। মাঝে লাল বৃত্ত ও দুই পাশে সবুজ রঙে সৃজন করা হয় নৌকার আদলে তোরণটি। স্থানীয় লোকজনের নজরে এলে বিষয়টি নিয়ে এলাকার সুধীজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সিরাজ মন্ডলের বিচার দাবি করেন।
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার (১২নভেম্বর) বেলা ২টার দিকে তোরণটি তৈরী করা হয় দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাগজোত বাজার এলাকায়। সারা বাংলাদেশের ন্যায় এ মাসের ২৮ নভেম্বর কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ৩য় ধাপে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তারই প্রচার প্রচারনার অংশ হিসেবে ওই নৌকার আদলে তোরণ নির্মান করা হয়। নৌকার আদলে তোরণটির মাঝে লাল এবং দুপাশে সবুজ রঙে সৃজন করা হয়। জাতীয় পতাকার অনুকরণে নৌকা তৈরী করায় তখনই এলাকার অনেকে প্রতিবাদ জানায়। এতেও কর্ণপাত না করে নির্মানকারী কাজ শেষ করে।
ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডলের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নেট ঘেটে দেখেছি এমন কাজ অনেক হয়েছে তাই আমিও করেছি এবিষয়ে ক্যামেরার সামনে কোন বক্তব্য দিতে রাজি নন।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান বিষয়টিতে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের মুখে শুনে অবাক হই। আমাদের মহান জাতীয় পতাকার আদলে নৌকার তোরণ নির্মান করা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
জাতীয় পতাকা বিধিমালায় সুস্পষ্ট ভাবে বর্নিত আছে
(*) সর্বদা পতাকার প্রতি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করিতে হইবে।
(*) পতাকা দ্বারা মোটরযান, রেলগাড়ী অথবা নৌযানের খোল, সম্মুখভাগ অথবা
পশ্চাদভাগ কোন অবস্থাতেই আচ্ছাদিত করা যাইবে না।
(*) ‘বাংলাদেশের পতাকা’ কোন কিছুর অচ্ছাদন হিসাবে ব্যবহার করা যাইবে না
এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার খন্দকার সহিদুর রহমান বিষয়টি সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলেও দু’দিন অতিবাহিত হলেও অদৃশ্য কারনে কোন পদক্ষেপ নেননি।
অপরদিকে উপজেলার রিফায়েতপুর ইউনিয়নের বিতর্কিত নৌকার মাঝি জামিরুল ইসলাম বাবু প্রচারনার সময় জাতীয় পতাকার আদলে টেবিল ক্লথ টেবিলে বিছায়ে প্রচারনার কাজ করতে দেখা গেছে।
এছাড়া আড়িয়া ইউনিয়নের নৌকার মাঝি সাঈদ আনছারী বিপ্লব জাতীয় পতাকার আদলে নৌকা তৈরী করে মোড়ের কোন এক স্থানে টানিয়ে রেখেছে যা রীতি মত পতাকা অবমাননার শামিল।
উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি শাহীন আফরোজ খসর বলেন, নির্বাচনী আচরন বিধিতে কোনপ্রকার সাজ সজ্জা,গেইট,তোরণ নির্মান করা নিষেধ আছে, জাতীয় পতাকা নিয়ে যদি কোনো অবমাননার ঘটনা ঘটে তাহলে তার সুষ্ঠ তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ৭৫কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আঃকাঃমঃ সরওয়ার জাহান বাদশাহ্ বলেন, যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।