অনলাইন ডেস্ক:
গ্লাসগো, লন্ডন ও প্যারিসে দুই সপ্তাহের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রবিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি-২১০৯)।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত রাত ৯টা ২০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হন শেখ হাসিনা।ইহসানুল করিম বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি-২১০৯) প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে এখানকার চার্লস দ্য গল বিমানবন্দর ত্যাগ করে।’ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার মোহাম্মদ তালহা এবং ফ্রান্সের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানায়।
তার আগে প্রধানমন্ত্রী লাল গালিচার ওপর দিয়ে হেঁটে বিমানে ওঠার সময় ২১ সদস্যের গার্ডদল তাঁকে স্ট্যাটিক গার্ড অব অনার জানায়।
গত ৩১ অক্টোবর যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সফরে স্কটল্যান্ডের বন্দরনগরী গ্লাসগো পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্লাসগোতে তিনি কপ২৬ এ বিশ্ব নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। গ্লাসগোতে অবস্থানকালে ১ নভেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী স্কটিশ ইভেন্ট ক্যাম্পাসে (এসইসি) কমনওয়েলথ প্যাভিলিয়নে ‘সিভিএফ-কমনওয়েলথ হাই লেভেল প্যানেল ডিসকাশন অন ক্লাইমেট প্রসপারিটি পার্টনারশিপ’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
কমনওয়েলথের মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কিউসির সঙ্গে একটি বৈঠকের পর তিনি কপ২৬-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদান করেন এবং একই অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ব্রিটিশ প্যাভিলিয়নে ‘অ্যাকশন অ্যান্ড সলিডারিটি-দ্য ক্রিটিক্যাল ডিকেড’ শীর্ষক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। একই দিন অপরাহ্নে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে তিনি কপ২৬-এর একটি ভিভিআইপি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্কটল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। ২ নভেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী স্কটিশ প্যাভিলিয়নে ‘ওমেন অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
শেখ হাসিনা স্কটল্যান্ডের ফাস্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জন’র সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। পরে কমনওয়েলথ সংবর্ধনায় যোগ দেন। বিকেলে প্রিন্স চার্লস শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং পরে তিনি ইউকে মিটিং রুমে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং দ্বিপক্ষীয় বৈঠক বুথে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে পৃথকভাবে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। তিনি সভাকক্ষ-৪ এ ‘ফোর্জিং এ সিভিএফ কপ-২৬ ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি প্যাক্ট’ শীর্ষক সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী ‘ওয়ার্ল্ড লিডার্স সামিট’র সমাপনী পর্বেও অংশগ্রহণ করেন।
সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা স্কটিশ পার্লামেন্টের স্পিকার অ্যালিসন জনস্টোন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। স্কটিশ পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ‘এ বাংলাদেশ ভিশন ফর গ্লোবাল ক্লাইমেট প্রসপারিটি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী।
৩ নভেম্বর দুপুরে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে লন্ডনের উদ্দেশ্যে গ্লাসগো ত্যাগ করেন। ওই দিন লন্ডনে পৌঁছার পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোইলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
প্রধানমন্ত্রী সেখানে ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১: বিল্ডিং সাসটেইনেবল গ্রোথ পার্টনারশিপ’, বঙ্গবন্ধুর ওপর সিক্রেট ডকুমেন্টের আন্তর্জাতিক প্রকাশনা এবং লন্ডনে বসবাসরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের নাগরিক সংবর্ধনাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
৯ নভেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সফরসঙ্গীরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে প্যারিসের উদ্দেশ্যে লন্ডন ত্যাগ করেন। একই দিন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে পৌঁছার পরপরই শেখ হাসিনা এলিসি প্যালেসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওইদিনই তিনি ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জিন কাস্টেক্সের সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন ম্যাটিগননে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
প্রধানমন্ত্রী ইউনেস্কো সদর দপ্তরে ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর দ্য ক্রিয়েটিভ ইকোনোমি’র পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান’, ইউনেস্কোর ৪১তম সাধারণ সম্মেলন, প্যারিস শান্তি ফোরাম এবং ইউনেস্কোর ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপনসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
সফরের শেষ মুহূর্তে শেখ হাসিনা ১৩ নভেম্বর ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের নাগরিক সংবর্ধনায় ভার্চুয়ালি যোগদান করেন।