মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি:
মাগুরার মহম্মদপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলার মেলা। সোমবার (১ নভেম্বর ) বিকেলে উপজেলার ডুমুরশিয়া হাইস্কুল মাঠে ডুমুরশিয়া বাজার বণিক সমিতি এ খেলার আয়োজন করে।
গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষকে আনন্দ দিতে ও দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে প্রতি বছর ১৬ই ফাল্গুন আয়োজন করা হয় এ লাঠি খেলা মেলার।
মেলায় হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি এক উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বাদ্যের তালে তালে নেচে নেচে লাঠি খেলে অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে লাঠিয়ালরা। খেলোয়াড়রা একে অপরের সঙ্গে লাঠি যুদ্ধে লিপ্ত হয়।
লাঠি দিয়ে অন্যের আক্রমণ ঠেকাতে থাকেন। আর এরই মধ্যে নিজের চেয়ে বড় লাঠি নিয়ে অদ্ভুত সব কসরত দেখিয়ে উপস্থিত সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন লাঠিয়ালরা।
আর লাঠিয়াল দলের ক্ষুদে এক লাঠিয়ালের কসরত দেখে অবির্ভূত হন প্রবীণ লাঠিয়াল। দল বেধে আগত দর্শকদের সালাম বিনিময় করেন।
এসব দৃশ্য দেখে আগত দর্শকরাও করতালির মাধ্যমে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেন।
কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া এ লাঠি খেলা দেখতে মেলা প্রাঙ্গণে হাজির হন নানা বয়সের মানুষ। ইট-পাথরের টুংটাং আওয়াজকে হার মানিয়ে কিছুটা হলেও পুরানো দিনের গ্রামীন চিত্ত বিনোদনের সুযোগ পান বয়ো-বৃদ্ধরা।
লাঠিয়াল বাদশা সর্দার জানান বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ ও বিনোদন জোগাতে আমরা লাঠি খেলা দেখাই। এ খেলা আমাদের পূর্ব-পুরুষের। আমরাও আমাদের সন্তানদের এ খেলা শিখিয়েছি। যাতে তারাও এ খেলা দেখিয়ে মানুষকে আনন্দ দিতে পারে। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে গ্রামীণ ঐহিত্যবাহী এ খেলাটি টিকে থাকবে, না হলে হরিয়ে যাবে।
দর্শনার্থীরা জানান, মাঠের স্বল্পতা আর ভিডিও গেমসের কারণে আমাদের শিশুরা ঘরমুখো। এমন সময়ে এ খেলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মেলার সভাপতি আঃ রাজ্জাক বলেন, লাঠি খেলা গ্রাম্য মেলায় দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে ও বাড়তি আনন্দ দিতে এ খেলার আয়োজন করা হয়েছে। তাদের চিত্ত বিনোদন দিতে ও ঐতিহ্যবাহী খেলাটি টিকিয়ে রাখতেই আমরা প্রতিবছর এ মেলার আয়োজন করে থাকি।