উখিয়া,কক্সবাজার, প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের উখিয়ার লম্বাশিয়া ক্যাম্পে ‘ আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পীস এন্ড হিউম্যান রাইটস(এআর এসপিএইচ)চেয়ারম্যান শীর্ষ রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের কিলিং মিশনে অংশ নেয়া প্রধান সহ ৪ হত্যাকারী রোহিঙ্গা দূর্বৃত্তকে আটক করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সদস্যরা।
২৩ অক্টোবর(শনিবার) ভোর ৪ টারদিকে লম্বাশিয়া ক্যাম্পের লোহার ব্রীজ এলাকায় অভিয়ান পরিচালনা করে ১টি ওয়ান শুটারগান এবং ১ রাউন্ড তাজা কার্তুজ সহ কিলিং মিশনের প্রধান আজিজুল হক কে আটক করতে সক্ষম হয় ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের
(এপিবিএন)’র একটি অভিযানিক দল।আজিজুল হকের স্বীকারোক্তি মতে ক্যাম্প-১ ইস্ট’র ব্লক ডি’র আশ্রিত রোহিঙ্গা আবদুল মাবুদের ছেলে মো. রশিদ ওরপে মুরশিদ আমিন,ক্যাম্প-ওয়েস্ট’র ব্লক-বি’র ফজল হকের ছেলে মো.আনাছ ও একই ব্লকের নুর সালামের ছেলে নুর মোহাম্মদ কে আটক করে বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান,১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক(পুলিশ সুপার) মো.নাইমুল হক।
২৩ অক্টোবর দুপুর ১ টায় উখিয়াস্থ ১৪ এপিবিএন অধিনায়কের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং কালে পুলিশ সুপার মো.নাইমুল হক জানান,মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামী মো.ইলিয়াছ বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়।ইলিয়াছের দেয়া জবানবন্দীর সুত্রে এপিবিএন ছায়া তদন্তে নামে।তারই সুত্রে মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের কিলিং মিশনের প্রধান আজিজুল হক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে,মুহিবুল্লাহ প্রত্যাবাসনের পক্ষে ভূমিকা রাখছিল,দিন-দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছিল,মুহিবুল্লাহ একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হচ্ছিল।তাকে থামাতে হবে।মুহিবুল্লাহকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়।
এসপি নাইমুল হক আরোও জানান,মুহিবুল্লাহ হত্যার দুইদিন আগে ২৭ সেপ্টেম্বর রাত অনুমান ১০ টায় লম্বাশিয়া মরকজ পাহাড়ে আজিজুল হকের নেতৃত্বে একটি গোপন বৈঠক হয়েছিল,ওই বৈঠকে আজিজুল হক সহ ৪ জন উপস্থিত ছিল।বৈঠকে মুহিবুল্লাহ কে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল তথাকথিত দূর্বৃত্তের এক শীর্ষ নেতা,যা বৈঠকে জানান দিয়েছিল আজিজুল হক।সে চক অনুযায়ী বৈঠকের মাঝখানে একদিন পর ২৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে এশারের নামায শেষে মুহিবুল্লাহ নিজ শেডে ফিরতি পথে পিছু নেয় দূর্বৃত্তরা।মুহিবুল্লাহ শেডে ফিরে গেলে ধৃত মুরশিদ আমিন মুহিবুল্লাহকে প্রত্যাবাসন বিষয়ে কথা আছে বলে এআরএসপিএইচ অফিসে ডেকে আনে। মুহিবুল্লাহর অবস্থান অপর আটক মো.আনাছ ও নুর মোহাম্মদ কে অবগত করে মুহিবুল্লাহর অফিস এলাকা ত্যাগ করে।মো.আনাছ ও নুর মোহাম্মদ কিলিং মিশন সংঘটিত করতে পূর্ব থেকে অবস্থান নেয়া অজ্ঞাত ৭ দূর্বৃত্তকে মুহিবুল্লাহর অবস্থান নিশ্চিত করে আসার সংকেত দেয়।এরপর ক্যাম্প- ইস্ট’র ডি ব্লকের রাস্তা ব্যবহার করে মুহিবুল্লাহর অফিসে চলে আসে দূর্বৃত্তরা।এসময় মুহিবুল্লাহ ১০/১৫ জন লোক নিয়ে আলাপচারিতায় ছিল।তখনই মুহিবুল্লাহর অফিসের প্রবেশ দরজার সামনে আজিজুল হক, মো. আনাছ ও নুর মোহাম্মদ সহ ৪ জন অস্ত্রধারী অবস্থান নেয়।৪ নের মধ্যে একজন বলে উঠে “মুহিবুল্লাহ উঠ”তখন মুহিবুল্লাহ উঠে দাড়ালে আজিজুল হক ১টি,মুরশিদ আমিন ২টি ও নুর মোহাম্মদ ১টি সহ ৪টি গুলি করে পালিয়ে যায়।রাত সাড়ে ৮ টায় মুহিবুল্লাহ হ্ত্যার মিশন সফল করে বলে তারা জানান।
১৪ এপিবিএন অধিনায়ক এসপি মো. নাইমুল হক আরোও জানান,মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০ জনকে আটক ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত ৮৭ জন রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারীকে আটক করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।অভিযান চলমান থাকবে।প্রযোজনীয় জনবলের জন্যও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রস্তাবনা প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।