কুষ্টিয়া প্রতিনিধি।।
কুষ্টিয়া-চুয়াডাঙ্গা সড়কের কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কবুরহাট বাজারের উপর সড়কের সাথে অবৈধভাবে দোকান ঘর করে ভাড়ায় খাটাচ্ছেন ঐ এলাকার সাদেক আলী নামের এক ব্যক্তি। কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ থেকে জনৈক সাদেক আলী সড়ক সংলগ্ন এই জায়গাটি লিজ বরাদ্ধ নিয়ে ভাড়ায় খাঠাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। এই ভাড়ার দোকানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করছেন তিন ব্যবসায়ী। দোকানটি ব্যস্ততম প্রধান সড়ক সংলগ্ন হওয়ার কারণে এই স্থানে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরে সোচ্চার হয়েছেন এলাকাবাসী। জেলা পরিষদের ওই জায়গাটি লিজ বরাদ্ধ না দিয়ে তৈরিকৃত টিনসেড ঘরগুলো অপসারনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
কুষ্টিয়া-চুয়াডাঙ্গা সড়কের কবুরহাট বাজারটি ব্যস্ততম সড়ক এলাকায়। এছাড়াও এটি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ একটি চালের মোকাম। এই এলাকায় রয়েছে কয়েকশ চাল কল। এজন্য কুষ্টিয়ার বটতৈল- কবুরহাট থেকে পোড়াদহ পর্যন্ত একটি ব্যবসায়িক এলাকা হিসেবে খ্যাত। কবুরহাট একটি স্থায়ী বাজার হওয়ার সুবাদে এখানে সপ্তাহের প্রতি শনিবার ও বুধবার বাজার বসে। এই বাজারের মধ্যভাগ দিয়ে অতিক্রম করেছে কুষ্টিযা -চুয়াডাঙ্গা সড়ক। আর এই
কুষ্টিয়া – চুয়াডাঙ্গা সংযোগ সড়কের কবুরহাট বাজারের উপর দিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক, বাস, ভ্যান, অটোরিকশা চলাচল করে। ব্যস্ততম এ সড়কের পাশে রয়েছে স্কুল, মাদ্রাসা, হেফজখানা সহ ৫/৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন জীবনের ঝুকি নিয়ে সড়কটি পারাপার হচ্ছে সাধারন মানুষসহ স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েরা। এখানেই সড়ক ঘেঁষে একটি টিনের দোকান ঘর নির্মাণ করে ভাড়ায় দিয়েছেন মৃত আবেদ আলী মণ্ডলের ছেলে সাদেক আলী মন্ডল। এই দোকান ঘরটি সড়কের এতটাই কাছে যে, রাস্তার পাশে জায়গা না থাকায় প্রায়শঃ এখানে দুর্ঘটনা ঘটে এবং দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে দূর্ভোগ পোহাতে হয় প্রতিদিন। বৃদ্ধ মহিলা-পুরুষ, সাধারন জনগনসহ স্কুল -কলেজগামী কোমলমতি শিশুরা এই দোকানের কারণে সড়কটি পারাপারে সংকোচবোধ করে। কারণ সড়কের সাথে দোকান থাকায় যানবাহন দেখতে পায় না পথচারীরা। তাছাড়া এই দোকানের দোকানদাররা থাকেন সব সময়ই শংকিত। খরিদ্দার দোকানে অবস্থান করে কেনাকাটা করেন জীরনের ঝুঁকি নিয়ে।
বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরে এলাকাবাসী কুষ্টিয়া জেলা পরিষদসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর গণ পিটিশন দিয়েছে।
সড়ক সংলগ্ন জেলা পরিষদের জায়গায় তৈরিকৃত দোকান ঘরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থাকা ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন বলেন, এই দোকান ঘর ২ বছর হলো ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছি। এখানে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে। সড়কের সাথে দোকান ঘর হওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটছে। দোকান ঘরগুলো অপসারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা জেলা পরিষদ থেকে কোনো নোটিশ পাইনি। লিজ গ্রহিতা সাদেক আলী মন্ডলই বলতে পারেন, এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। তবে সচেতন মানুষ হিসেবে বলতে পারি, সড়কের সাথের দোকান ঘরগুলো না থাকাই ভালো।
এই অবৈধ দোকানগুলোর পিছনের সপ্তর্ষি এন্টারপ্রাইজের মালিক ব্যবসায়ী মিজান আলী বলেন,আমাদের মার্কেটের সামনে সড়কের সাথে অবৈধ দোকান থাকায় বেচাকেনায় অসুবিধা হচ্ছে। তাছাড়া ওই দোকানগুলো হওয়ায় অহরহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন,দোকানগুলো ভেঙে দিলে কবুরহাট বাজারে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটা কমে আসবে।
কবুরহাট বাজার কমিটির সভাপতি কাজী আলতাফ হোসেন বলেন, এখানে কবুরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, প্রাথমিক স্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকার জনসাধারণ প্রতিদিন এই সড়ক পারাপার হয়। সড়কের সাথে দোকানপাট হবার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি দুটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। যা মৃত্যু ও আহতের মত ঘটনা ঘটে। তিনি আরো বলেন, কবুরহাটে সপ্তাহে শনিবার ও বুধবার হাট বসে। যার কারণে এই সড়কে বিশাল যানজটের সৃষ্টি হয়। তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এই দোকান ঘরের জায়গার লিজ বাতিল করে যত দ্রুত সম্ভব সড়কের সাথের ওই তিনটি দোকান ভেঙে বা উচ্ছেদ করে জনগণের যাতায়াতের সুবিধা করে দেয়ার দাবী জানান।
এ বিষয়ে ঐ ঘর মালিক সাদেক আলী মন্ডলের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ থেকে এই জায়গা আমার নামে লিজ নেয়া আছে। চলতি বছরে নবায়ন করা হয়নি। তবে টাকা জমা দেওয়া আছে।
অপরদিকে জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, এলাকাবাসীর দেওয়া নোটিশ জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ পেয়েছেন। চলতি বছরে জেলা পরিষদ কবুরহাট বাজারের এই দোকানটির জায়গা জনস্বার্থে এখনো নবায়ন করেনি।
এদিকে এলাকাবাসী সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কবুর হাট-বাজারস্ত বটতলা- পোড়াদহ সড়কের সাথের সাদেক আলী মন্ডল কর্তৃক নির্মিত দোকান ঘর গুলো অপসারনের ব্যবস্থা এবং ইজারা নবায়ন না করার জন্য কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।