অনলাইন ডেস্ক:
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরো ৬ মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দণ্ড স্থগিত করে এবং আগের সব শর্ত বহাল রেখেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আজ রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার আমাদের কাছে আবেদন করেছিলেন। আমরা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁর মুক্তির মেয়াদ চতুর্থ দফায় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) বাড়িতে বসে চিকিৎসা নেবেন। বিদেশে যেতে পারবেন না। এর সঙ্গে আগে যেসব শর্ত ছিল, সেসব শর্ত বহাল থাকবে।’
সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর তাঁর ভাই শামীম এস্কান্দার একটি আবেদন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বরাবর পাঠান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মতামত জানার জন্য আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। আইন মন্ত্রণালয় মতামত দিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। ওই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান রাষ্ট্রীয় কাজে জার্মানিতে ছিলেন। সেখান থেকে তিনি গত বুধবার রাতে দেশে ফিরে বৃহস্পতিবার নিজ অফিসে যান। তিনি মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পরই গতি পায় আবেদনটি।
সূত্র আরো জানায়, বৃহস্পতিবারই শামীম এস্কান্দারের আবেদনটির সারসংক্ষেপ আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সম্মতি দেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’ আবেদনের অগ্রগতি কত দূর-এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ছোট ভাই আমাদের কছে একটি আবেদন নিয়ে এসেছিলেন। আমরা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। আপনারা জানেন, আমি বিদেশে ছিলাম। আইন মন্ত্রণালয় যে অভিমত দিয়েছে, এখন সে অনুযায়ী প্রক্রিয়া চলছে।’
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ১ অক্টোবর তাঁর দেশে ফেরার কথা। এদিকে ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদার মুক্তির মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি সুরাহা করে দিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।
জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ড ভোগ করছেন খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দণ্ডিত হওয়ার পর তাঁকে নেওয়া হয় পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে। কয়েক দফায় সেখান থেকে এনে বিএসএমএমইউতে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
গত বছর বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনা ছড়িয়ে পড়লে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর এ পর্যন্ত তিন দফা তাঁর মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। নতুন করে আবেদন করার পর আবারও ছয় মাসের জন্য মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।